রায়গঞ্জঃ রাজ্যের ৪২টি আসনের মধ্যে নজরকাড়া রায়গঞ্জ। অবশ্য নজড়কাড়া হবে নাই বা কেন! মূল প্রতিদ্বন্দ্বীদের তিনজনেরই যে বিগত দিনে অন্য দলে ছিলেন। তাই তিনজনকে দলবদলু বললেও অত্যুক্তি হবে না। রবিবার রাতে রায়গঞ্জ আসনে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে কার্তিক পালের নাম ঘোষণা করা হয়। এই আসন থেকে তৃণমূলের হয়ে কৃষ্ণ কল্যাণী এবং কংগ্রেসের হয়ে আলি ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর লড়াই করছেন।
বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পাল ছাত্র জীবনে ছাত্র পরিষদ করে তৎকালীন কংগ্রেস নেতৃত্বের খুব বিশ্বাসভাজন হয়ে ওঠেন। পরবর্তীতে কংগ্রেসের নেতাও হন। কিন্তু ২০১৬ তে তৃণমূলে যোগ দেন। ২০২০ এর শেষে তৃণমূল থেকে সরাসরি বিজেপিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কার্তিকবাবুর রাজনৈতিক কেরিয়ার রামধনুর মতো রঙিন বললেও ভুল হবে না।
অন্যদিকে তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে রায়গঞ্জের মার্চেন্ট ক্লাব ময়দানে অনুষ্ঠিত সভায় বিজেপিতে যোগ দেন। দেবশ্রী চৌধুরী, অর্জুন সিং সহ একাধিক বিজেপি নেতৃত্ব সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। বিধানসভা নির্বাচনে জেতার কিছুদিন পরেই তিনি ঘাসফুলে আস্থা রেখে তৃণমূলে যোগ দেন।
আবার কংগ্রেস প্রার্থী আলি ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর সারা ভারত ফরওয়ার্ড ব্লকের তিনবারের বিধায়ক ছিলেন। পরবর্তীতে আজাদ হিন্দ মঞ্চে পাঁচমাস থেকে জাতীয় কংগ্রেসে যোগ দেন ২০২২-এ।
যদিও দলবদলু হয়েও তিনজন প্রধান প্রতিপক্ষ নির্বাচনে লড়াইয়ের প্রসঙ্গে নিজেদের মতো করে যুক্তি দিয়েছেন। বিজেপি প্রার্থী কার্তিক পাল বলেন, ‘দল তো পরিবর্তন হবেই। দল পরিবর্তন না হলে সরকার কীভাবে পরিবর্তন হবে? মানুষের মতো পরিবর্তনশীল। আগামীদিনে ভোটের ময়দানে বাকিটা দেখা যাবে।’ তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর কথায়, ‘অতীত দিয়ে কিছু হয় না। সবসময় বর্তমানকে নিয়ে ও ভবিষ্যৎকে মাথায় রেখে চলা উচিত। তিন বছরের পুরোনো অতীত দিয়ে কিছুই নির্ধারণ করা যায় না। ১৯৯৮ এর আগে তো তৃণমূল ছিল না। তখন সবাই কংগ্রেসে ছিলেন। তাই অতীত বলে কিছু নেই। বর্তমান ও ভবিষ্যৎই আসল।’
আবার কংগ্রেস প্রার্থী ভিক্টর আলির সাফাই, ‘মানুষ কার সঙ্গে আছে সেটা বড় বিষয়। জনবিরোধী বিজেপি সরকারের প্রতি মানুষের আস্থা নেই। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সমগ্র দেশে কংগ্রেসের বিকল্প কেউ নেই। তাই অতীত কিছু নয়। আসল বিষয় হল মানুষ পাশে আছেন কিনা। মানুষ একমাত্র কংগ্রেসের সঙ্গে আছে।’