অনসূয়া চৌধুরী, জলপাইগুড়ি : এর আগে মিনি দুর্গা বানিয়েছিলেন। এবার ইচ্ছা হল বিদ্যার দেবী সরস্বতীর মূর্তি তৈরির। যেমন ভাবা তেমন কাজ। মাত্র পাঁচদিনে প্রায় ১২ ইঞ্চির (Inch) প্রতিমা তৈরি করে ফেললেন সৈকত বাড়ই।
বুধবার সরস্বতীপুজো। হাতে আর বেশি সময় নেই। মোটামুটিভাবে রং সহ সাজসজ্জা শেষ পর্যায়ে। জলপাইগুড়ি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সৈকত ওপেন ইউনিভার্সিটিতে (Open University) পড়ছেন। বাবা শ্যামল বাড়ই পেশায় ইলেক্ট্রিশিয়ান (Electrician)। কোনও দোকানে নয়, যখন যেখান থেকে ডাক আসে, তখন কাজ পান। ফলে সংসার তেমন আর্থিকভাবে সচ্ছল নয়। তাই নিজের শখ পূরণ করতে টিউশনি করে পয়সা জমিয়েছেন। সেই টাকা দিয়ে তৈরি করেন এই মিনি সরস্বতী। পড়াশোনা, টিউশনি (Tuition) করা ছাড়া বাকি সময়টুকু এই কাজেই দেন তিনি। সৈকত জানান, প্রায় ৫ বছর ধরে মিনি দুর্গা বানাচ্ছেন। এবার মনে হল সরস্বতী বানাবেন। সেইমতো কাজ শুরু করেন। বড় প্রতিমা বাদ দিয়ে ছোট প্রতিমা বানানোর ইচ্ছে হল কেন? জবাব এল, ‘বড় প্রতিমা বানানো যায়। কিন্তু ছোট প্রতিমা নিজের কাছে রাখা যায়। পুজো শেষে বিসর্জনের বালাই থাকে না, জল দূষণও হয় না।’
তিনি জানান, ছোটবেলা থেকেই ফেলে দেওয়া জিনিস দিয়ে নতুন নতুন সামগ্রী বানাতে ভালো লাগে তাঁর। তাঁর কথায়, ‘মনে হয়, ফেলে দেওয়া জিনিসটা যেন নতুন সত্তা পেল। মিনি সরস্বতীর আগে মান্ডালা বানিয়েছিলাম। যখন কেউ ভালো বলে বা কেনার জন্য বলে, তখনকার অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না।’
সৈকতের তৈরি সরস্বতীর মূর্তি মাটির। পরনের শাড়িতে রাংতা কাগজ। কাপড় দিয়ে গয়না তৈরি করেছেন আর মুকুটটি থার্মোকলের। মুকুটে বসানো হয়েছে বিভিন্ন আকারের কাচ। মা মিলি বাড়ই বলেন, আমরা সেভাবে ওকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে পারি না। কিন্তু সবসময় ওর কাজে উৎসাহ দিই।’