ধূপগুড়ি: যাওয়ার কথা ছিল টিউশন পড়তে। কিন্তু জলপাইগুড়ি জেলার বারোঘরিয়ার সেই নাবালিকার পরিকল্পনা ছিল একেবারেই আলাদা। আগে থেকেই পালানোর ছক কষে মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে গোপনে ১৫ হাজার টাকাও তুলে নিয়েছিল। সেই টাকা দিয়ে প্লেনের টিকিট কেটে দিয়েছিল হরিয়ানার প্রেমিক। পরিকল্পনা ছিল বিমানে দিল্লি। সেখান থেকে প্রেমিকের সঙ্গে সংসার পাতার। যদিও শেষমুহূর্তে দিল্লি বিমানবন্দর থেকেই সেই নাবালিকাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার সেই প্রেমিক তরুণ আদতে সেই নাবালিকাকে বিক্রি করে দেওয়ার ছক কষেছিল কি না, সেটাই এখন তদন্ত করে দেখছে পুলিশ।
অভিযোগ জানাবার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নাবালিকাকে উদ্ধার করার বিষয়টিকে বড় সাফল্য হিসেবেই দেখছে পুলিশ। ধূপগুড়ি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক (এসডিপিও) গিলসেন লেপচা বলেন, ‘ঘটনায় পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। পাশাপাশি তদন্ত শুরু হয়েছে।’
পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মোবাইলে গেম খেলতে গিয়ে হরিয়ানার এক তরুণের সঙ্গে নাবালিকার পরিচয় হয়। তারপর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সেই প্রেমিকের কথামতোই মায়ের অ্যাকাউন্ট থেকে এটিএম কার্ড দিয়ে ১৫ হাজার টাকা তুলে সে প্রেমিকের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছিল। প্রেমিক যে প্লেনের টিকিট কেটে দেয়, সেই টিকিট নিয়েই বাগডোগরা থেকে বিমানে চেপে সোজা দিল্লি পৌঁছে যায় ধূপগুড়ির সেই নাবালিকা। এদিকে, মেয়ে টিউশন পড়ে না ফেরায় চিন্তিত বাড়ির লোকজন ধূপগুড়ি থানার দ্বারস্থ হন। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে নাবালিকাকে দিল্লি বিমানবন্দরে দেখা গিয়েছে। দেরি না করে তাকে সেখানেই আটকে দেওয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মেয়েটি জানায়, দিল্লি বিমানবন্দরের বাইরে হরিয়ানার তরুণের অপেক্ষা করার কথা। প্রেমিকের কাছে যেতে না পেরে আক্ষেপও প্রকাশ করে মেয়েটি।
ধূপগুড়ির নাবালিকার অভিভাবক আগে থেকে কিছুই জানতেন না। পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসা তথ্য শুনে তাঁরাও অবাক। মেয়ের বাড়ির লোকের কথায়, ‘মেয়ে যে পড়াশোনার ফাঁকে গেম খেলত, আমাদের জানা ছিল না। তবে বইখাতার মাঝে মোবাইলে কিছু একটা করত।’ ধূপগুড়ি থানার পুলিশ ইতিমধ্যেই নাবালিকাকে দিল্লি থেকে উদ্ধার করে এনে সিডব্লিউসিতে পাঠিয়েছে। মেয়েটির গোপন জবানবন্দি রেকর্ড করা হলেই পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।