উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ দুয়ারে লোকসভা ভোট (Lok sabha Election 2024)। আর তার আগে যত কাণ্ড এই বঙ্গে। রবিবারই চাকরি ছেড়ে রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। এবার তৃণমূল ছাড়ার জল্পনা রাজ্যের আরও এক বিধায়কের। তিনি বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy)। সোমবার দুপুরে বিধানসভায় গিয়ে তাপস বিধায়ক পদে ইস্তফা দিতে পারেন। ঘনিষ্ঠমহলে তিনি জানিয়েছেন, তৃণমূলের সঙ্গে তিনি নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছেন না। তাপস ঘনিষ্ঠদের দাবি, প্রবীণ এই রাজনীতিক বিজেপিতে যোগ দিতে পারেন। যদিও দল ছাড়া বা বিজেপিতে যোগ দেওয়া নিয়ে কোনও মন্তব্যই করেননি বিধায়ক। এদিকে তাপসের মানভঞ্ঝনে সোমবার সকালেই বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছে যান রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu) এবং তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
সম্প্রতি দলের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি বিষয়ে মতানৈক্য তৈরি হয়েছে বরাহনগরের তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায়ের। সূত্রের খবর, তৃণমূল যে তিনি আর করবেন না, সে বিষয়ে মোটামুটি মনস্থির করেই ফেলেছেন তিনি। রবিবার রাতে অনুগামীদের সঙ্গে নিজের বাড়িতে বৈঠকও করেছেন তাপস। সেখানে তিনি অনুগামীদের সামনে দল প্রসঙ্গে নিজের ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাপসের এক হিতৈষি জানিয়েছেন, ‘‘তাপসদার বাড়িতে ইডি তল্লাশি হল ১২ ঘন্টা ধরে। দল সে বিষয়ে এক বারও মুখ খুলল না! অথচ, শেখ শাহজাবানের বাড়িতে ইডির অভিযান বা ফিরহাদ হাকিমের বাড়িতে তল্লাশির নামে সিবিআই কী ভাবে সব তছনছ করেছে, রান্নাঘরে গিয়ে মশলার কৌটো পর্যন্ত উল্টে দিয়েছে তদন্তকারীরা, সে বিষয়ে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়েছেন! একই যাত্রায় এই পৃথক ফল কেন হবে?’’
এদিকে লোকসভা ভোটের আগে তাপসের দল ছাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হতেই তাঁর মান ভাঙাতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু রবিবার রাত পর্যন্ত তিনি দল ছাড়ার ব্যাপারে অনড় মনোভাবই দেখিয়েছেন। দল ছাড়ার প্রসঙ্গে প্রবীণ বিধায়ক তাপস রায় জানিয়েছেন, ‘‘আমার যা যা করণীয়, সর্বসমক্ষেই করব। সাংবাদিক বৈঠক ডেকে, সকলকে জানিয়েই করব। এই মুহূর্তে এর চেয়ে বেশি আর কিছু বলছি না।’’ আরও একটি কথা তিনি বলেছেন, যা ‘তাৎপর্যপূর্ণ’। তাপসের কথায়, ‘‘আমি সেই বিধায়ক, গত ১৯৯৬ সাল থেকে বিধানসভা থেকে মেডিকেল বিল বাবদে একটা পয়সাও তুলিনি! আমি, আমার মা, স্ত্রী বা ছেলেমেয়ের জন্য এক পয়সাও নিইনি! সেই আমার বাড়িতে ইডি হানা দিল! কেন দিল? কে দেওয়ালেন?’’
গত ১২ জানুয়ারি তাপসের বিবি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বাড়িতে ইডি হানা দিয়েছিল। টানা ১২ ঘণ্টা তল্লাশির পর তাপসের বাড়ি থেকে কিছু কাগজপত্র এবং তাঁর মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করে নিয়ে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাঁকে উত্তর কলকাতার জেলা সভাপতি পদ থেকে সরানো, মন্ত্রী না করা, দলে ‘গুরুত্ব’ না-পাওয়া ইত্যাদি নিয়ে তাপসের ‘ক্ষোভ’ ছিল। দুদিন আগেই উত্তর কলকাতার তৃণমূল সাংসদ সুদীপে বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে তোপ দেগেছেন তাপস। বরাহনগরের বিধায়কের সরাসরি অভিযোগ, সুদীপই তাঁর বাড়িতে ইডিকে ‘ঢুকিয়েছিলেন’।