গৌরহরি দাস ও দেবদর্শন চন্দ, কোচবিহার: বিধি ভেঙে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (Uttar Banga Krishi Vishwavidyalaya) রেজিস্ট্রারের (Registrar) পদোন্নতি করা হয়েছে অভিযোগ তুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য তথা রাজ্যপালের দ্বারস্থ হয়েছেন কোচবিহার উত্তর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক তথা বিজেপির জেলা সভাপতি সুকুমার রায়। বৃহস্পতিবার স্পিডপোস্টের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়েছেন। এছাড়াও এ ধরনের অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাঁকে কী করে পরপর আটবার রেজিস্ট্রার পদে দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়েও বিধায়ক প্রশ্ন তুলেছেন। রেজিস্ট্রারের পদোন্নতি অবৈধ ঘটনার কথা জানাজানি হতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে হইচই পড়ে গিয়েছে।
ইউবিকেভি’র উপাচার্য ডঃ দেবব্রত বসু বলেন, ‘পাঁচ মাস আগে আমি উপাচার্য হিসাবে এখানে কাজে যোগ দিয়েছি। ফলে আগে কী হয়েছে সেটা আমার জানা নেই। তবে উপাচার্যর ক্ষমতা অনুযায়ী রেজিস্ট্রারকে পুনরায় ছয় মাসের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’
যদিও রেজিস্ট্রার ডঃ প্রদ্যুৎ পাল বলেন, ‘কে কী অভিযোগ করেছেন বা পাঠিয়েছেন তা আমাদের জানা নেই। তবে রাজ্যপাল যদি জিজ্ঞাসা করেন তাহলে আমরা তার উত্তর দেব।’
সুকুমারবাবু রাজ্যপালের কাছে যে অভিযোগপত্র পাঠিয়েছেন তাতে তিনি দিনক্ষণ দিয়ে পরিষ্কার উল্লেখ করেছেন যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান রেজিস্ট্রার ডঃ প্রদ্যুৎ পাল ইউবিকেভি’র অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে কর্মরত অবস্থায় ২০১২ সালের ২২ অগাস্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লিয়েন নিয়ে হরিয়ানার একটি ইনস্টিটিউটে কাজে যোগ দেন। সেখানে ২০১৫ সালের ৩১ মার্চ কাজ করার পরের দিনই ১ এপ্রিল ফের ইউবিকেভিতে এসে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসাবে কাজে যোগ দেন। যা পুরোপুরি অবৈধ বলে দাবি করেছেন সুকুমারবাবু। আচার্যের কাছে পাঠানো অভিযোগে তিনি দাবি করেছেন, যে শিক্ষা দপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী কেউ যদি লিয়েন নিয়ে এক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্য কোথাও গিয়ে কাজে যোগ দেন সেই লিয়েন পিরিয়ড চলাকালীন তিনি যদি পুনরায় এসে তাঁর আগের বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজে যোগ দেন তাহলে আগে তিনি যে পদে এখান থেকে লিয়েন নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁকে এসে সেই পদেই কাজে যোগ দিতে হয়। যদিও প্রদ্যুৎবাবু এখান থেকে লিয়েন নিয়ে যাওয়ার সময় অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর থাকলেও তিনি এসে কাজে যোগ দিয়েছেন আসোসিয়েট প্রফেসর হিসাবে। যেটা হতে পারে না।
এছাড়াও বিধায়কের দ্বিতীয় অভিযোগ, ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল অবৈধভাবে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর হিসাবে যোগ দেওয়ার পাঁচ মাস সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই তিনি প্রফেসর হয়ে যান। বিধায়কের দাবি, এক্ষেত্রেও নিয়ম রয়েছে অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর থেকে প্রফেসর হতে গেলে ন্যূনতম তিন বছর সময় লাগে। ফলে এটাও পুরোপুরি অবৈধভাবে হয়েছে বলে তাঁর দাবি। একজন প্রফেসরের পদোন্নতি নিয়ে এধরনের গুরুতর অভিযোগ থাকার পরেও তাঁকে কী করে আটবার রেজিস্ট্রারের পদে দায়িত্ব দেওয়া হল তা নিয়েও চিঠিতে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
বিধায়ক বলেন, ‘আমাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে বর্তমান রেজিস্ট্রারের পদোন্নতি আইন মেনে হয়নি। আমরা পুরো বিষয়টি রাজ্যপালের নজরে এনেছি।’