সুভাষ বর্মন, পলাশবাড়ি: রাজ্য সরকারের সবুজ সাথীর সাইকেল নিয়ে গাঁটের টাকা খরচ করতে হয় অভিভাবকদের। স্কুল থেকে নয়া সাইকেল দেওয়ার পর সেটি দোকানে মেরামতির জন্য চার-পাঁচশো টাকা খরচ না করলে চালানোই যায় না বলে পড়ুয়াদের দাবি। বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার-১ ব্লকের শিলবাড়িহাট হাইস্কুলে সবুজ সাথীর সাইকেল দেওয়া হয়। তবে সাইকেলের এই তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে সম্প্রতি ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী’র টোল ফ্রি নম্বরে ফোন করে নালিশ জানান সুরিপাড়ার দুলাল অধিকারী নামে এক অভিভাবক। অন্য অভিভাবকদেরও একই অভিযোগ। সমস্যার বিষয়টি শিক্ষকদের একাংশও মেনে নিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে ভালো মানের সাইকেল দেওয়ার দাবি উঠেছে।
এ বছর নবম থেকে দশম শ্রেণিতে ওঠা পড়ুয়াদের এখন ধাপে ধাপে সবুজ সাথীর সাইকেল দেওয়া হচ্ছে। বুধবার থেকে সাইকেল বিলি হচ্ছে শিলবাড়িহাট হাইস্কুলে। এদিনও পড়ুয়াদের একাংশকে সাইকেল দেওয়া হয়। ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পীযূষকুমার রায়ের কথায়, ‘এবার ৩৩৫ জন ছাত্রছাত্রী সাইকেল পাচ্ছে। এখন যদিও সবাই দশম শ্রেণিতে পড়ে। তবে গতবারের নবম শ্রেণির তালিকা ধরেই সাইকেলগুলি দেওয়া হচ্ছে।’ অভিভাবকদের অভিযোগ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, ‘এখানে তো আমাদের কিছু করার নেই৷ প্রশাসনের তরফে যেভাবে পাঠানো হয় সেভাবেই স্কুল থেকে সাইকেল বিলি হয়।’
এদিন সুরিপাড়ার পড়ুয়া আকাশ অধিকারী স্কুল থেকে সাইকেলটি নেয় ঠিকই, কিন্তু সেটি চালাতে পারেনি। সেই সাইকেল ঠেলে বাড়ি নিয়ে যায় আকাশ। তার কথায়, ‘সাইকেলটি চালাতে পারিনি। হাত দিয়ে ঠেলে বাড়ি নিয়ে আসি। এখন দোকানে মেরামত করতে প্রায় পাঁচশো টাকা লাগবে।’ গত বুধবার একই এলাকার উর্বশী রায় নামে এক ছাত্রীকেও ওই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হয়। ওই পড়ুয়ার বাবা মদন রায়ের কথায়, ‘এখন দোকানে মেরামত না করলে এই সাইকেল ব্যবহার করাই যাবে না। রাজ্য সরকার সাইকেল দিচ্ছে ভালো কথা। কিন্তু সাইকেলের গুণগতমান খুবই খারাপ। তাই আমাদের দাবি, ভালো মানের সাইকেল দেওয়া হলে ভালো হয়।’
সম্প্রতি সুরিপাড়ার দুলাল অধিকারী ‘সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর’ টোল ফ্রি নম্বরে সাইকেল নিয়ে অভিযোগ জানান। দুলালের বড় ছেলে দু’বছর আগে সবুজ সাথীর সাইকেল পেয়েছিল। এবার ছোট ছেলেও সাইকেল পেয়েছে। তাই এমন অভিজ্ঞতা দুলালের ভালোই রয়েছে। তাঁর কথায়, ‘তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে সবুজ সাথীর সাইকেলগুলির যে ফিটনেস নেই, তা জানাতে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তরে ফোন করি। সেখান থেকে আমার অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে।’ তিনি আরও জানান, নয়া সাইকেল হলেও মেরামতি না করলে চালানো যায় না। সাইকেলের নাট, নজেল ঠিক থাকে না। চাকাতেও সমস্যা থাকে। কিছু কিছু জিনিসও বদলাতে হয়। এতে ৫০০ টাকার মতো খরচ লেগে যায়৷ অনেক গরিব অভিভাবকের কাছে এটাই চাপের।