কোচবিহার: ফের কচ্ছপ তথা মোহনের মৃতদেহ ভেসে উঠল দিঘির জলে। বৃহস্পতিবার বানেশ্বরের ঐতিহ্যবাহী শিব দিঘিতে মোহনটিকে ভেসে উঠতে দেখা গিয়েছে। এছাড়াও দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের অধীনে থাকা এই দিঘিতে বেশকিছু মোহন অসুস্থ হয়ে পড়েছে বলে খবর। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে বানেশ্বরে। খবর পেয়ে বন দপ্তরে কর্মীরা এসে মোহনটিকে দিঘি থেকে তুলে নিয়ে যায়।
বানেশ্বরের শিবদিঘি ও এলাকার আশেপাশের বিভিন্ন জলাশয়গুলিতে প্রচুর মোহন রয়েছে। বিশেষ করে শিবদিঘির এই মোহন দেখতে বাইরে থেকে প্রতিদিন প্রচুর পর্যটক বানেশ্বরে আসেন। যে কারণে কোচবিহার ২ ব্লকের বানেশ্বর জায়গাটি জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে। ফলে এখানকার অর্থনীতির একটা বড় অংশ এই মোহনকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে। এই অবস্থায় গত বছরও অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে অজানা রোগে বানেশ্বরের শিবদিঘিতে প্রায় ১৮-২০টি মোহনের মৃত্যু হয়েছিল। এছাড়া প্রচুর মোহন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের উদাসীনতার কারণেই বানেশ্বরের শিবদিঘিতে মোহনগুলির মৃত্যু হয়েছে বলে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল বানেশ্বর মোহন রক্ষা কমিটি থেকে শুরু করে এলাকার সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতি সামাল দিতে শেষ পর্যন্ত দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের তরফে দিঘির অর্ধেক জল ছাকার পাশাপাশি অসুস্থ মোহনগুলোকে তুলে নিয়ে আলাদা জায়গায় নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করা, খাবারের পরিমান বাড়ানো, বিশেষজ্ঞের দল নিয়ে আসা সহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছিল। এতে গত কয়েক মাস ধরে শিবদিঘিতে মোহনের মৃত্যু প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় শীতের শুরুতেই বৃহস্পতিবার শিবদিঘিতে ফের একটি মোহনের দেহ ভেসে ওঠে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই বানেশ্বরজুড়ে ফের চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। খবর পেয়ে তড়িঘড়ি সেখানে ছুটে যান বানেশ্বর মোহনক্ষা কমিটির সভাপতি পরিমল বর্মন।
পরিমলবাবু বলেন, ‘বানেশ্বরের শিবদিঘিতে এদিন একটি মোহন মরে ভেসে উঠেছে। আরও বেশকিছু মোহন অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের তরফে তেমন কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় এবছর শীতের শুরুতেই এদিন ফের একটি মোহন মারা গেল। এভাবে মারা গেলে খুব শীঘ্রই শিবদিঘি মোহন শূন্য হয়ে পড়বে। খুব শীঘ্রই বিষয়টি নিয়ে বড়সড় আন্দোলন গড়ে তুলব।’