গোয়ালপোখরঃ ধারাল অস্ত্র দিয়ে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে খুন করল দুষ্কৃতীরা। নৃশংস খুনের ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল এলাকায়। মাথা ও পেটের একাধিক জায়গায় ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দেহ উদ্ধারের পাশাপাশি ঘটনাস্থল থেকে একটি চাকু ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করেছে পুলিশ। যদিও মোবাইলটি মৃতের বলে দাবি পুলিশের। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম মোবারক হোসেন (৪০)। বাড়ি গোয়ালপোখর থানার চুরাকুট্টি এলাকায়। রবিবার সকালে বাড়ি থেকে একশো মিটার দূরে বাঁশঝাড় থেকে তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের পরিবারের দাবি, এলাকায় কারও সঙ্গে তাঁর কোনও বিবাদ ছিল না। তিনি পেশায় দিনমজুর ছিলেন। পরিকল্পনামাফিক তাঁকে বাড়ি থেকে ডেকে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় যারা প্রকৃত অভিযুক্ত তাদের চিহ্নিত করে খুঁজে বের করুক পুলিশ। তবে কী কারণে এই ব্যক্তিকে খুন করা হল তা নিয়ে অন্ধকারে পুলিশ ও পরিবারের লোকজন। রহস্যজনক খুনের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে ধরম পুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মহম্মদ নুর আলম বলেন, খুবই দুঃখজনক ঘটনা। মোবারকের শরীরের একাধিক স্থানে ধারাল অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে। এটাই প্রমাণ করে যে, তাঁকে পরিকল্পনামাফিক খুন করা হয়েছে। আমরা পুলিশের কাছে প্রকৃত তদন্তের আর্জি জানিয়েছি। পুলিশ তদন্তের কাজ শুরু করেছে।
নিহতের স্ত্রী সাহনাজ খাতুন বলেন, “শনিবার রাত ৯ টার দিকে আমার স্বামী বাইরে থেকে বাড়িতে আসেন। তার পর খাওয়া সারতে রাত দশটা বেজে যায়। এর পর আমি ঘুমিয়ে পড়ি। পরের দিন সকালে আমার স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনতে পাই। বাড়ির পাশের বাঁশঝাড়ের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তিনি”। তাঁর দাবি, “আমরা গরিব মানুষ। আমার স্বামী দিনমজুরি করে এতদিন সংসার চালাতেন। কারও সঙ্গে তাঁর ঝগড়া বিবাদ ছিল না। এই ভাবে খুন হবে তা কল্পনার মধ্যে ছিল না। এখন আমি কী করব তা ভেবে কুল পাচ্ছি না। পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তারা সবাই নাবালক ও নাবালিকা। তাদের ভবিষ্যত কী হবে?”
মৃতের ভাই মারফত আলির বক্তব্য, “আমার দাদাকে নৃশংস ভাবে দুষ্কৃতীরা খুন করেছে। তাঁর মাথায় ও পেটে ধারাল অস্ত্রের কোপ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পিছনে কারা আছে তা জানি না। এর আগে তিনি পাঞ্জাবে কাজ করতে গিয়েছিলেন। ইদের এক মাস আগে তিনি বাড়িতে আসেন। টাকা পয়সা নিয়ে কারও সঙ্গে হয়তো ঝামেলা থাকতে পারে তা আমাদের জানা নেই। এ খুনের রহস্য কী তা বুঝে উঠতে পারছি না। যারা আমাদের দাদার খুনের মূল অভিযুক্ত তাদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি”।
স্থানীয় বাসিন্দা রেজাউল হকের সংযোজন, এ ব্যক্তির খুন নিয়ে আমরাও ধোঁয়াশায় রয়েছি। পুলিশ অভিযুক্তদের দ্রুত খুঁজে বের করুক। রাজনীতির রং লাগানো না হয়। এটাই আমাদের দাবি। গোয়ালপোখর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ইসলামপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।