পুণ্ডিবাড়িঃ একজনের ওপর আক্রোশ গিয়ে পড়ল নিরাপরাধ এক ব্যাক্তির ওপর। দুষ্কৃতীদের আক্রমণে প্রাণ হারালেন এক নিরীহ টোটোচালক। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পুণ্ডিবাড়ি থানার অন্তর্গত খাগড়াবাড়ি এলাকায়। এই ঘটনায় পুলিশ অভিযুক্ত দুই জনকে গ্রেপ্তার করে ৬দিনের হেপাজতে নিয়েছে পুণ্ডিবাড়ি থানার পুলিশ। বাকিদের খোঁজে চলছে তল্লাশি।
জানা গিয়েছে, মৃতের নাম অনুকূল সরকার। তিনি পশ্চিম খাগড়াবাড়ি রাজীব কলোনির বাসিন্দা। পয়লা বৈশাখের দিন রাত আনুমানিক দশটা নাগাদ তিনি যাচ্ছিলেন একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে। খাগড়াবাড়ি চৌপথি সংলগ্ন এলাকায় আচমকা তাঁর ওপর আক্রমণ করে কয়েকজন দুষ্কৃতী। এই ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে নিয়ে আসে কোচবিহার এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। পরবর্তীতে ওই ব্যক্তিকে কোচবিহারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করায় পরিবারের সদস্যরা। রবিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় অনুকূলের।
মৃতের স্ত্রী মঞ্জু সরকার জানান, তাঁর স্বামী পেশায় টোটো চালক। তিনি ওইদিন রাতে টোটো নিয়ে বাড়ি ফিরে পরে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণ থাকায় সেখানে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। কিছুক্ষণ পরেই তাঁরা খবর পান দুষ্কৃতীরা তাঁর স্বামীর উপর হামলা চালিয়েছে। মঞ্জুর আরও দাবি, পরে তাঁরা জানতে পারেন ওইদিন রাতেই, ঘটনাস্থলে অপর এক ব্যক্তির সঙ্গে কিছু যুবকের ঝামেলা হয়। ঝামেলার কিছুক্ষণ পর অভিযুক্তরা ওই সেই যুবকের ওপর আক্রমন করতে যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং তার স্বামীর জামার রং একইরকম ছিল। তাই অভিযুক্তরা তাঁর স্বামীকে ওই ব্যক্তি ভেবেই আক্রমন চালায়। তিনি একেবারেই নিরপরাধ। এভাবে তাঁর মৃত্যু তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছেন না। অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন তিনি। অনুকূলের প্রতিবেশীরাও জানান, অনুকূল কোনওদিন কোনও ঝামেলায় জড়াননি। তাঁর নামে এলাকায় কোনও খারাপ রেকর্ড নেই। তাঁর এভাবে মৃত্যুতে এলাকার সকলেই হতবাক।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের স্বামী গৌতম দেবনাথ রবিবার মৃতের বাড়িতে গিয়ে জানান পরিবারটি খুবই নিরীহ। যে বা যারা এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে কঠোর শাস্তি দাবি করেন তিনি।
ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই পুণ্ডিবাড়ি থানায় বেশ কয়েকজনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মৃতের পরিবার। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ শনিবার গভীর রাতে পশ্চিম খাগড়াবাড়ি এলাকা থেকে ভেণ্ডা মিয়াঁ ও সুভাষ চন্দ্র রায় নামে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। রবিবার তাদের আদালতে পাঠানো হলে বিচারক ছয় দিনের পুলিশি হেপাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। বাকি অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের খোঁজে জোর তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে কি কারণে এই খুনের ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। যদিও এবিষয়ে পুলিশ জানিয়েছে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখা হচ্ছে।