মালদা: বিজেপিকর্মীর রহস্যমৃত্যুকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মালদার বামনগোলায়। মৃতের নাম বুরন মুর্মু। বামনগোলা ব্লকের মদনাবতি কয়নাদিঘি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন তিনি। শনিবার বাড়ি থেকে বুরনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনায় ছেলের বিরুদ্ধে বাবাকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। যদিও স্থানীয় বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের লোকেরাই তাদের দলীয় কর্মীকে খুন করেছে।
এলাকায় বিজেপি কর্মী হিসেবে পরিচিত ছিলেন বুরন মুর্মু। তবে তাঁরই পুত্রবধূ এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামনগোলা ব্লকের ১৯ নম্বর বুথে তৃণমূলের টিকিটে লড়েছিলেন। যদিও বিজেপি প্রার্থীর কাছে হেরে যান তিনি। স্থানীয়দের অভিযোগ, বৌ হেরে যাওয়ায় প্রায়ই বাড়িতে অশান্তি করতেন বুরন মুর্মুর ছেলে বিপ্লব। বাবা যেহেতু বিজেপি করেন, তাই বাবার সঙ্গে ঝামেলা লাগত। সেই ঝামেলার কারণেই ছেলে বাবাকে খুন করেছেন বলে দাবি স্থানীয়দের।
গতকাল বাড়ি থেকে বুরনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে খবর, বুরনের দেহে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশের কাছে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। এদিকে, ঘটনার পর থেকেই নিখোঁজ ছেলে। পুলিশ এসে পুত্রবধূ শর্মিলা মাড্ডিকে আটক করেছে।
উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ তথা তপশিলি মোর্চার রাজ্য সভাপতি খগেন মুর্মু বলেন, ‘পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তৃণমূলের মদতে ৫০ জনেরও বেশি মানুষ খুন হয়েছে। এবার খুন করে ঝুলিয়ে দেওয়া হল বামনগোলার বিজেপির একনিষ্ঠ কর্মী বুরন মুর্মুকে। ভোটগণনার পর থেকেই ছেলে বিপ্লব তৃণমূলের মদতে তার বাবা বুরন মুর্মুকে নানাভাবে ভয় দেখিয়ে শাসানি দিচ্ছিল। কেন ছেলের বউকে ভোটে পরাজিত করা হল! এই নিয়ে দলের তরফে স্থানীয় কার্যকর্তারা পুলিশকে জানিয়েও ছিলেন। কিন্তু তারপরেও আমাদের তাঁকে হারাতে হল। তৃণমূলের মদতে বিপ্লব মুর্মু ছেলে হয়েও বাবাকে মারধর করে খুন করেছে।’
বামনগোলা ব্লক তৃণমূল সভাপতি অশোক সরকার বলেন, ‘বুরন মুর্মু কোনো দিনও বিজেপি করতেন না। যাঁর ছেলে তৃণমূলের এসটি সেলের বামনগোলা ব্লক সভাপতি, তিনি কেন বিজেপি করবেন? বাবা ছেলের জমি সংক্রান্ত বিবাদ ছিল। কীভাবে বুরন মুর্মুর মৃত্যু হয়েছে সেটা পুলিশি তদন্তে সামনে আসবে। বিজেপি এই মৃত্যু নিয়ে রাজনীতি করছে। বিজেপির সব অভিযোগ মিথ্যে এবং ভিত্তিহীন।’