রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: নির্মাণকাজ সমাপ্ত। তা সত্ত্বেও সুপারস্পেশালিটি ব্লকের দায়িত্ব নিচ্ছে না উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল (NBMCH) কর্তৃপক্ষ। সেই ব্লক হস্তান্তরের জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। আর দায়িত্ব নেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য সচিব কয়েকদিন আগেই মেডিকেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন।
মেডিকেলের একাধিক বিভাগ ভগ্নপ্রায় অবস্থায় রয়েছে। সেই বিভাগগুলিকে আপাতত সুপারস্পেশালিটিতে স্থানান্তরিত করে ভগ্নপ্রায় বিভাগগুলো মেরামত করার প্রয়োজন। কিন্তু এখনও ওই বিভাগের দায়িত্ব নিজেদের হাতে নেয়নি মেডিকেল কর্তৃপক্ষ। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠছে। হাসপাতাল সুপার সঞ্জয় মল্লিকের সাফাই, ‘পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা নিয়ে কিছু সমস্যা রয়েছে। পাশাপাশি নিকাশি ব্যবস্থাও এখনও ঠিক হয়নি। এই দুটো কাজ হয়ে গেলে আমরা দায়িত্ব নিয়ে নেব।’
উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনার ১৫০ কোটি টাকায় সুপারস্পেশালিটি ব্লক ২০১৫ সাল থেকে তৈরি হচ্ছে। দু’বছরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও সেখানে চিকিৎসা পরিষেবা পুরোপুরি চালু হয়নি।
বহু টালবাহানার পর ২০২২ সালের শেষে ওই ভবনে কয়েকটি সুপারস্পেশালিটি আউটডোরের পরিষেবা চালু হয়েছে। কিন্তু ইন্ডোর এখনও চালু হয়নি। কয়েকমাস আগে রাজ্যের স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম মেডিকেলে এসে বৈঠক করেন। সেই সময় তিনি সুপারস্পেশালিটি ব্লক যে অবস্থায় রয়েছে, সেটাই হস্তান্তর করে নেওয়ার জন্য মেডিকেল কর্তাদের বলে গিয়েছিলেন। মেডিকেলে কয়েকটি ভগ্নপ্রায় বিভাগকে সুপারস্পেশালিটিতে সরিয়ে ওই বিভাগগুলি মেরামত করার কথা ভেবে এই উদ্যোগ। এর মধ্যে রয়েছে ফিমেল মেডিসিন, ফিমেল সার্জিক্যালের মতো বিভাগ।
ফিমেল মেডিসিন বিভাগের দুটি কংক্রিটের পিলারে বেশ কয়েক মাস ধরে ফাটল ধরেছে। দুটি পিলারই হেলে রয়েছে। যে কোনও সময় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারই দোতলায় রয়েছে ফিমেল সার্জিক্যাল বিভাগ। আপাতত সুপারস্পেশালিটির ইন্ডোরে এই দুটি বিভাগকে স্থানান্তর করে সংস্কারের কাজ করা প্রয়োজন। পরবর্তীতে সমস্ত সুপারস্পেশালিটি বিভাগের পরিষেবা নতুন ব্লকে চালু হবে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রায় দু’মাস আগে সুপারস্পেশালিটির বরাতপ্রাপ্ত এজেন্সি ভবন হস্তান্তরের জন্য হাসপাতাল সুপারকে চিঠি দিয়েছে। সেইসময় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পূর্ত দপ্তরের সিভিল এবং ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগকে চিঠি দিয়ে ভবনের কাজ খতিয়ে দেখার জন্য বলে। পূর্ত দপ্তর সমীক্ষা করে রিপোর্টও দিয়েছে। তারপরেও স্থানান্তর হয়নি।