শুভঙ্কর চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি: রেকর্ড ‘ফেল’ আটকাতে স্নাতক স্তরের চার বছরের পাঠ্যক্রমে বিষয় নির্বাচন কাঠামোয় পরিবর্তন আনার ভাবনাচিন্তা করছে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় (NBU) কর্তৃপক্ষ। বোর্ড অফ স্টাডিজ-এর বৈঠক থেকে তেমনই প্রস্তাব উঠেছে। বর্তমান কাঠামোয় পড়ুয়াদের একটি মেজর ও একটি মাইনর বিষয় বেছে নিতে হচ্ছে। ফলে তুলনায় দুর্বল বা পিছিয়ে থাকা ছাত্রছাত্রীদের উপর চাপ বাড়ছে। তাই তাঁরা যাতে মেজরের পরিবর্তে শুধুু দুটি মাইনর বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করে স্নাতক হতে পারেন, সেইমতো পদক্ষেপ করতে চাইছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে (University of north bengal administrative building) বিভিন্ন বোর্ড অফ স্টাডিজ-এর চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠকে বসেছিলেন পরীক্ষা নিয়ামক তথা ভারপ্রাপ্ত কলেজ পরিদর্শক দেবাশিস দত্ত। সেখানে ৩৪টি বোর্ড অফ স্টাডিজ-এর চেয়ারম্যানরা উপস্থিত ছিলেন। সূত্রের খবর, খারাপ ফলাফলের জন্য ছাত্রছাত্রীদের গাফিলতি ও পড়াশোনায় অমনোযোগী হওয়ার পাশাপাশি কলেজগুলির পরিকাঠামোগত সমস্যা, শিক্ষক ঘাটতি, নিয়মিত ক্লাস না হওয়া, কম সময়ে পাঠ্যক্রম শেষ করতে না পারা সহ নানা সমস্যা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেইসব সমস্যা সমাধানে বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছেন চেয়ারম্যানরা।
পরীক্ষা নিয়ামকের বক্তব্য, ‘৪ মার্চ সমস্ত কলেজগুলির অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক হবে। সেখানে চেয়ারম্যানদের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে। অধ্যক্ষদের প্রস্তাব শোনা হবে। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব আমরা। আশা করছি সেইদিন কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে। মেজর বাদ দিয়ে শুধু দুটি মাইনর নিয়ে পড়ুয়ারা কোর্স শেষ করতে পারবে কি না, সেই দিকগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাঠ্যক্রমেও বেশ কিছু পরিবর্তনের কথা ভাবা হচ্ছে।’
ইংরেজি বোর্ড অফ স্টাডিজ-এর চেয়ারম্যান বিনায়ক রায়ের কথা, ‘বৈঠকে অনেক বিষয় নিয়েই আলোচনা হয়েছে। মূল কথাটি হল, কোভিডের সময় ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় যে বড়সড়ো ঘাটতি হয়েছে সেটা এখনও পর্যন্ত পূরণ হয়নি। ফলে নতুন ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে তারা খাবি খাচ্ছে। পাঠ্যক্রম বুঝে ওঠার আগেই পরীক্ষা চলে আসছে। তাই তাদের অনেক বেশি পড়াশোনা করতে হবে আর শিক্ষকদের অনেক বেশি ক্লাস করাতে হবে।’
পাঠ্যক্রমের জটিলতা মূল সমস্যা নয় বলেই মনে করছেন ফিজিক্স বোর্ড অফ স্টাডিজ-এর চেয়ারম্যান বিকাশচন্দ্র পাল। তাঁর কথা, ‘পাঠ্যক্রমে খুব বড় কিছু পরিবর্তন হয়েছে, তা কিন্তু নয়। পুরোনো পাঠ্যক্রমকেই আমরা খানিকটা এদিক-ওদিক করে সাজিয়েছি। মূল সমস্যাটা পড়াশোনায় ঘাটতি। সেটা পূরণ করাই এখন মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।’