উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: একশো দিনের কাজের বকেয়া টাকার দাবিতে মঙ্গলবার দিল্লিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিল তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা। সেখানে মন্ত্রী তো দেখা করেননি উল্টে তাঁদের পড়তে হয়েছিল পুলিশি হেনস্থার মুখে। অনেক রাতে পুলিশি হেপাজত থেকে মুক্ত হন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ একাধিক নেতা নেত্রী। সেখান থেকেই অভিষেক ঘোষণা করেন, বুধবার দিল্লি থেকে কলকাতা ফিরে বৃহস্পতিবার এক লক্ষ কর্মী-সমর্থক নিয়ে ‘রাজভবন চলো’ অভিযান করবে তৃণমূল।
তৃণমূল সেকেন্ড ইন কমান্ডের এই ঘোষণার পর গতকাল রাত থেকেই শুরু হয় রাজভবন অভিযানের রূপরেখা। তবে সবচেয়ে উল্লেখ্যযোগ্য বিষয় হল তৃণমূল কংগ্রেস ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দেশের দুই বড় শহরে এর আগে কখনও সমাবেশ করেছে বলে দলের পুরনো নেতা কর্মীরাও মনে করতে পারছেন না। কিন্তু সাংসদের নির্দেশে ঘোষণা করা হয়েছে কর্মসূচি। আর যেকোন উপায়ে সফল করতে হবে কর্মসূচি। তাই দিল্লি থেকে অভিষেকের নির্দেশ মত রাজভবন অভিযানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৃণমূলের বিভিন্ন শাখা সংগঠন ও জেলা নেতৃত্বকে। ওপর মহলের নির্দেশ পেয়েই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে প্রতিটি জেলায়। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য জানান, দলের ছাত্র সংগঠন তৃণমূল ছাত্র পরিষদ কলকাতা-সহ তৎসংলগ্ন জেলা হাওড়া, হুগলি, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার নেতা-কর্মীদের রাজভবনে জমায়েত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মহিলা সংগঠনের সভানেত্রী তথা রাজ্যের অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দায়িত্ব নিয়েছেন দলের মহিলা সংগঠনের সদস্যদের রাজভবনের সামনে উপস্থিত করতে।
তৃণমূলের বহু নেতা বুধবার সকাল পর্যন্ত ফিরতে পারেনি কলকাতায়। তাই গতকাল রাতেই রাজ্যের কর্মী সমর্থকদের সঙ্গে জমায়েত নিয়ে দীর্ঘক্ষণ কথা হয় অভিষেকের। হাওড়া সদর জেলা তৃণমূলের সভাপতি তথা ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণেন্দু ঘোষ বুধবার বলেন, ‘মঙ্গলবার রাত থেকেই আমার জেলার প্রত্যেকটি ব্লক, ওয়ার্ড ও অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি। কথা হয়েছে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে হাওড়া সদর জেলা যে পরিমাণ লোক নিয়ে আসে, আমরা চেষ্টা করছি সেই পরিমাণ লোক যাতে রাজভবনের সামনে হাজির করানো যায়।’ যদিও এদিন সকালে দিল্লি থেকে কলকাতায় ফিরে তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলা যুব সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি বলেন, ‘কাঁথি সাংগঠনিক জেলা থেকে আমরা রেকর্ডসংখ্যক লোক আনার চেষ্টা করছি। আমাদের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক কর্মসূচি ঘোষণার পর থেকেই কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। আমি কাঁথি ফিরে যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করে আবারও বৃহস্পপতিবার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রাজভবনে আসব।’
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, মঙ্গলবার রাতে দিল্লিতে রাজ্যের বঞ্চিত মানুষদের চিঠি নিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে এক প্রতিনিধি দল। কিন্তু মন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে দেখা করেননি। এই প্রসঙ্গে অভিষেক বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা না-করে পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গিয়েছেন।’ রাজ্যপাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি। আমরা তাই তাঁর সঙ্গে দেখা করে বাংলার বঞ্চিত মানুষের কথা বলব। যে ৫০ লক্ষ চিঠি আমরা নিয়ে এসেছিলাম, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তা নেননি। তাই সেই চিঠিগুলি আমরা রাজ্যপালকে দেব।’