রায়গঞ্জঃ অধিক লাভের আশায় অনলাইন ইনভেস্টমেন্টের ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হলেন রায়গঞ্জের কয়েকশো বাসিন্দা। এদের মধ্যে শিক্ষক, সরকারী কর্মী, ব্যবসায়ী, গৃহবধূ সহ অনেকেই আছেন। একটি নামী বহুজাতিক সংস্থার নামে একটি থার্ড পার্টি অ্যাপ তৈরি করে প্রতরাণার জাল বিছায় প্রতারকরা। আর সেখানে বিনিয়োগ করেই প্রতারিত হন প্রচুর মানুষ। প্রতারিতরা রায়গঞ্জের সাইবার ক্রাইম থানায়অভিযোগ দায়ের করেছে।
জানা গিয়েছে, প্রায় ৪ মাস আগে একটি নামী বহুজাতিক সংস্থায় টাকা বিনিয়োগ করেন রায়গঞ্জের প্রচুর মানুষ। ৩০০ টাকা বিনিয়োগ করে পাওয়া যাচ্ছিল হাজার হাজার টাকা। সেই টাকা ঢুকেছিল অনেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কিন্তু গত ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে অ্যাপটি সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যেতেই সাধারণ মানুষের মাথায় হাত পড়ে। প্রতারিতরা রায়গঞ্জের সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ জানায়। ওই ভুয়ো সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ এনে প্রতারিতরা দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন রায়গঞ্জের সাইবার ক্রাইম থানায়। যদিও অভিযুক্ত দুই যুবকের পাল্টা দাবি, তারা কোনওভাবেই এই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত নয় এবং তারা প্রতারিত হয়েছেন বলেও দাবি করে সাইবার সেলে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
প্রতারিতদের মধ্যে আছেন রায়গঞ্জ করোনেশন হাই স্কুলের শিক্ষক পাউলুস মুর্মু। তিনি জানান, ‘খুব লজ্জার কথা। যে যুবক আমাকে এই অ্যাপে জয়েন করিয়েছিল সে আমার প্রাক্তন ছাত্র। ও এসে আমাকে ইনভেস্ট করতে বললে আমি রাজি হয়ে যাই। মানুষের লোভের শেষ নেই। আমরা যতই শিক্ষিত হই না কেন অর্থের কাছে গিয়ে সবাই সারেন্ডার করে। সেই শিকার হয়েছি আমি নিজেও। টাকা পয়সা ছিল বলে ইনভেস্ট করেছিলাম, কিন্তু দেখছি কয়েকদিন হল বন্ধ হয়ে গেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার প্রায় ১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা চিট হয়েছে। অনেকের গেছে। তবে সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগছে যারা আমার কথা মতো হাজার হাজার টাকা ইনভেস্ট করেছে। অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। আগামী দিনে কেউ যাতে এ ধরনের অনলাইন অ্যাপে কেউ ইনভেস্ট না করে সেজন আবেদন করব। শিক্ষক হয়ে এই ধরনের চিট ফান্ডে ইনভেস্ট করা ঠিক হয়নি।’ ইতিমধ্যে আমরা সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
এদিকে এই ঘটনায় যাদের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে তাঁরা হলেন দেবায়ন ভট্টাচার্য ও সৌমেন দাস। তাঁদের দাবি, তাঁরা নিজেরা ও তাঁদের আত্মীয়স্বজন প্রতারিত হয়েছে। তাই সেও সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। রায়গঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।