তমালিকা দে, সিটং: এপ্রিল থেকে প্যাকেটজাত মশলা নয়, পাহাড়ের হোমস্টেগুলোতে (Homestay) ব্যবহার করা হবে অর্গানিক মশলা (Organic spices)। পাহাড়ের পর্যটকরা এবার অর্গানিক খাবারের স্বাদ পেতে চলেছেন। প্রাথমিকভাবে প্রায় দেড়শোটি হোমস্টেতে এই সুবিধা চালু করা হচ্ছে। পরিকল্পনা রয়েছে, ধীরে ধীরে বাকি হোমস্টেগুলোতেও এই ব্যবস্থা চালু করা হবে।
কাদের কথা ভেবে পাহাড়ের হোমস্টেগুলোতে এধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে? জানা গিয়েছে, পাহাড়ের কৃষকরা (Farmers) বর্তমানে নিজেরাই অর্গানিক পদ্ধতিতে মশলা চাষ করছেন। বাইরে থেকে মশলা ও অন্য খাদ্যসামগ্রী আনতে পরিবহণের জন্য বাড়তি খরচ হয়। হোমস্টের মালিকরা সেইসব প্যাকেটজাত খাদ্যসামগ্রী যদি স্থানীয় কৃষকদের থেকে কেনেন, তাহলে অনেক কৃষক লাভবান হবেন। দেড়শো হোমস্টে স্থানীয় কৃষকদের থেকে মশলা কিনলে লাভের মুখ দেখবেন পাঁচশোরও বেশি কৃষক। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ও উদ্যানপালন দপ্তরের সহযোগিতায় হোমস্টেগুলোতে এই ব্যবস্থা এপ্রিল থেকে চালু হবে।
পাহাড়ের (Hill) কৃষকরা যাতে আরও বেশি করে লাভের মুখ দেখেন, সেজন্য ফলের পাশাপাশি জৈব পদ্ধতিতে শাকসবজি চাষের ওপরও নজর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, ছাগলের খামার, মৎস্যচাষ যাতে করা যায়, সেই উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। পুরোটাই পাহাড়ের কৃষকদের কথা ভেবে। প্রকল্প আধিকারিক অনিল থাপা বলেন, ‘হোমস্টেগুলোতে স্থানীয়দের থেকে জিনিস নিয়ে পর্যটকদের কিনে দেওয়া হয়। তাহলে অনেক কৃষক উপকৃত হবেন। পাশাপাশি অর্গানিক খাবার খেয়ে পর্যটকরাও খুশি হবেন।’ এই অর্গানিক মশলাপাতি কেনার ক্ষেত্রে কোন কোন সুবিধা মিলবে? তিনি জানান, টাটকা মশলা মিলবে, তার সঙ্গে শুধুমাত্র প্যাকেজিং খরচই লাগবে। বাইরে থেকে পরিবহণের খরচটা কমে যাবে। জানা গিয়েছে, এলাচ, অ্যাভোকাডো, মধু, দারুচিনি সহ বিভিন্নরকমের মশলা চাষের কাজ শুরু হয়েছে।
পাহাড়ের হোমস্টের জন্যও এই উদ্যোগ ভালো হবে বলে জানালেন সিটংয়ের একটি হোমস্টে মালিক আশিকা থাপা। তিনি বলেন, ‘পর্যটকদের পাতে অর্গানিক খাদ্যসামগ্রী পড়লে তাঁরাও এখানকার টাটকা মশলার স্বাদ নিতে পারবেন। পাশাপাশি পাহাড়ের বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক হালও ফিরবে।’
বিগত কয়েকবছরে পাহাড়ে হোমস্টের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। কিন্তু তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্থানীয়দের অর্থনৈতিক হাল সেভাবে পরিবর্তন হয়নি। বিশেষ করে কৃষকদের মধ্যে কোন মরশুমে কোন মাটিতে কী চাষ করলে ভালো ফলন হবে, সে সম্পর্কে ধারণা খুবই কম। কৃষকদের হাল ফেরাতে তাই তাঁদের তৈরি জিনিস রাখা হবে হোমস্টেগুলোতে। এপ্রিল থেকে শুরু এই নতুন প্রোজেক্টে হাল ফিরবে কৃষকদের বলে আশা করছেন উদ্যোক্তারা।