কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে উত্তরবঙ্গে গিয়ে ফেরার পথে কপ্টার দুর্ঘটনায় পায়ে, কোমরে চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনায় এবার অস্ত্রোপচার হতে পারে মমতার। নিজেই সেকথা জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘আমার আরও ৮-১০ দিন লাগবে। তারপর আমি বেরোতে পারব। আমার ছোটখাটো অপারেশন করতে হবে।’
সোমবার বীরভূম যাওয়ার কথা থাকলেও দুবরাজপুরে ভার্চুয়াল সভা করেন তৃণমূল নেত্রী। সেখান থেকে অস্ত্রোপচারের কথা জানান তিনি। পাশাপাশি বিরোধীদের কটাক্ষের জবাব দিয়ে তাঁর বক্তব্য, তাঁর দুর্ঘটনা নিয়ে কুৎসা করছে বিরোধীরা। এর বিচার চাইবেন জনগণের কাছে। তিনি বলেন, ‘আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের কাছে যাই। পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরই আমি বোর্ড গঠনের সময় আপনাদের কাছে যাব।’ এসএসকেএম সূত্রে জানানো হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর অস্ত্রোপচার করানো প্রয়োজন।
প্রসঙ্গত, উত্তরবঙ্গ সফরের শেষদিনে কপ্টার দুর্যোগের মুখে পড়ায় পা এবং কোমরে চোট পান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জলপাইগুড়ির ক্রান্তিতে পঞ্চায়েতের প্রচারসভা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। সেখান থেকে সভা শেষ করে কপ্টারে করে বাগডোগরা বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হন তিনি। বৈকুণ্ঠপুর জঙ্গলের ওপর দিয়ে ওড়ার সময় আচমকাই দুর্যোগের মুখে পড়ে মুখ্যমন্ত্রীর কপ্টার। আবহাওয়া খারাপ থাকায় কাঁপতে থাকে কপ্টারটি। প্রবল ঝাঁকুনিতে পথ বদলে সেবক এয়ারবেসে কপ্টারটির জরুরি অবতরণ করান পাইলট। সেখানেই কপ্টার থেকে নামতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর চোট লাগে বলে জানা যায়। সেবক এয়ারবেসেই তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। তারপর সড়কপথে বাগডোগরা বিমানবন্দরে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেখান থেকে কলকাতা উড়ে যান। বিকেলে কলকাতা বিমানবন্দরে নামার পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য উডবার্ন ওয়ার্ডের কেবিন তৈরি রাখা হয়। সেখানেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার যাবতীয় ব্যবস্থা করা হয়। এসএসকেএমে পৌঁছান রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে। কপ্টার জরুরি অবতরণ করার পর ফোন করে মুখ্যমন্ত্রীর খবর নেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
মমতার শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসএসকেএমের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর বাঁ হাঁটুর লিগামেন্টে চোট লেগেছে। চোট রয়েছে তাঁর বাঁ দিকের হিপ জয়েন্টের লিগামেন্টেও। তবে চোট থাকা সত্ত্বেও এসএসকেএমে ভর্তি থাকতে চাইছিলেন না মুখ্যমন্ত্রী। অবশেষে চিকিৎসকদের পরামর্শ নেওয়ার পর গাড়িতে করে বেরিয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। বাড়িতে শুরু হয় তাঁর চিকিৎসা। চলে ফিজিও থেরাপি। সশরীরে আর কোথাও ভোটপ্রচারে যেতে পারেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। গত বিধানসভা নির্বাচনের আগেও পায়ে চোট পেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই চোট নিয়েই গোটা প্রচার পর্ব সারেন তিনি।