সজল দে ও দীপেন রায়, মেখলিগঞ্জ: তাঁকে নিয়ে ‘গুজব ছড়ানো’ তৃণমূল নেতাদের নামে জেলা নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানাবেন মেখলিগঞ্জের বিধায়ক (Mekhliganj MLA) পরেশচন্দ্র অধিকারী (Paresh Adhikary)। মঙ্গলবার মেখলিগঞ্জে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে পরেশবাবু দাবি করেন, তাঁর নামে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। তিনি তৃণমূলের সৈনিক হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে আছেন। লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election) আগে মেখলিগঞ্জে শুভেন্দু অধিকারীর সভায় লোক হবে না বুঝতে পেরেই বিজেপি (BJP) নেতারা তাঁর নাম ব্যবহার করে লোক টানতে চাইছেন। তবে দলের স্থানীয় কিছু নেতার মন্তব্য সম্পর্ক তাঁর বক্তব্য, ওই নেতাদের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। নানারকম মন্তব্য করে ওই নেতারা প্রচারে থাকতে চাইছেন।
কেন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে? পরেশ বলেন, ‘সিবিআই কোর্টে একটি চার্জশিট জমা দিয়েছে। তারপর থেকেই অনেকে গুজব ছড়াচ্ছে যে ওই মামলা থেকে বাঁচার জন্যই আমি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছি। কিন্তু এই গুজবের কোনও ভিত্তি নেই।’ সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত দলের মেখলিগঞ্জ শহর সভাপতি বিষ্ণুপদ ঘোষের বক্তব্য, ‘গুজব ছড়ানো তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করার দাবি উচ্চ নেতৃত্বের কাছে জানাব। ভোট এলেই মেখলিগঞ্জে তৃণমূলকে দুর্বল করার চেষ্টা চালায় বিরোধীরা আর তাতে মদত দেয় দলেরই কিছু নেতা-কর্মী। সেই কারণেই কখনও প্রাক্তন বিধায়ক অর্ঘ্য রায়প্রধান বিজেপিতে যাচ্ছেন, আবার কখনও বর্তমান বিধায়কের দলবদলের কথা রটানো হচ্ছে। মেখলিগঞ্জ পুরসভার পুরপ্রধান কেশবচন্দ্র দাসও পরেশচন্দ্র অধিকারীর জনসমর্থনকে কাজে লাগাতে বিজেপি গুজব ছড়াচ্ছে বলে মন্তব্য করেন। যদিও বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি বাপি গোস্বামী দাবি করেছেন, ‘পরেশ এবার শুধু নয়, গত লোকসভা ভোটেও বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়েছেন। আমাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছিলেন। সেই বৈঠকে আমিও উপস্থিত ছিলাম। তখনও দলে নেওয়া হয়নি, এবারও তাঁর মতো চাকরি চোরকে নেওয়া হবে না।’
উচ্চ নেতৃত্বকে অভিযোগ জানানোর বিষয়টি পাত্তা দিতে নারাজ পরেশের বিরোধী গোষ্ঠী। জেলা তৃণমূল যুবর সাধারণ সম্পাদক বাপ্পা মণ্ডলের দাবি, ‘দিদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাতে শিখিয়েছেন। আমরা সৈনিক সেই ভাষাতে প্রতিবাদ করছি। কোথায় অভিযোগ জানাবেন পরেশবাবু জানান।’ একই দাবি ব্লক সহ সভাপতি আনারুল মহম্মদেরও। তাঁর বক্তব্য, ‘বিজেপি ও সোশ্যাল মিডিয়ায় পরেশের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনা নিয়ে মন্তব্য করেছিলাম। এখনও বলছি, উনি দল ছাড়লে আমাদের দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’
পরেশের একসময়ের সহকর্মী, ফরওয়ার্ড ব্লকের মেখলিগঞ্জ লোকাল কমিটির সভাপতি অরবিন্দ রায়ের কটাক্ষ, ‘ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়ার আগেও মেখলিগঞ্জের এসডিও মাঠের প্রকাশ্য জনসভায় উনি বলেছিলেন, আমি হনুমান হলে বুক চিরে দেখাতাম আমার ভেতরে ফরওয়ার্ড ব্লক ছাড়া কিছু নেই। তার পরেরটা ইতিহাস।’