খোকন সাহা, বাগডোগরা: এমনিতেই বাগডোগরা (Bagdogra) ব্যস্ততম বিমানবন্দর। স্থানাভাবে সবসময় ভিড়ে গিজগিজ করে এলাকাটি। তার ওপরে লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election 2024) উপলক্ষ্যে ভিভিআইপিদের উত্তরবঙ্গে আনাগোনা বাড়ায় সমস্যা তৈরি হয়েছে বাগডোগরা বিমানবন্দরে (Bagdogra Airport)। বিশিষ্টদের চার্টার্ড এবং হেলিকপ্টারের ভিড়ে বিঘ্ন হচ্ছে যাত্রী পরিষেবা। অভিযোগ, ভিভিআইপিদের বাড়তি সুযোগসুবিধা দিতে গিয়ে সাধারণ যাত্রীদের অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। ভোট ঘোষণার পর থেকেই এই অসুবিধা চললে কিছুটা বাধ্য হয়ে মুখ বুজে মেনে নিচ্ছেন যাত্রীরা (Flight Passenger)।
এপ্রসঙ্গে বাগডোগরা বিমানবন্দরে সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুভাষচন্দ্র বসাকের বক্তব্য, সিকিম সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াতের জন্য বাগডোগরাকে ব্যবহার করা হয়। এজন্য এই বিমানবন্দরের ওপরে চাপ বেশি। তবে ভিভিআইপি এলে একটু অসুবিধা হলেও মানিয়ে নিতে হয়।’
আরেক আধিকারিক হিমাদ্রি দাস যদিও বলেন, এমনিতেই এখানে ব্যস্ত সময়ে একসঙ্গে কয়েকটি বিমান নামলে যাত্রীদের ভিড়ে টার্মিনালে জায়গা দেওয়া যায় না।’ তিনি আরও জানান, অ্যাপ্রনে পাঁচটির বেশি বিমান দাঁড়ানোর জায়গা নেই। তখন চার্টার্ড বিমান থাকলে অন্য বিমান নামতে সমস্যা হয়। সেই সময় অন্য বিমানকে দেরিতে নামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। তাই কোনও বিমান বাগডোগরায় চলে এলে সেটিকে আকাশে চক্কর কাটতে বলা হয়। আবার হেভিওয়েটদের স্বাগত জানাতে দলের কর্মীরা ভিড় করায় যাত্রীদের রীতিমতো ধাক্কাধাক্কি করে বের হতে হয়। যা নিয়ে হেমা সিনহা নামে এক যাত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ভিভিআইপিকে অন্য গেট দিয়ে বের করলে আমাদের এমন যুদ্ধ করে বের হতে হয় না।’
এদিকে বিমানবন্দর থেকে ভিভিআইপি যাতায়াতের যে তালিকা পাওয়া গিয়েছে তাতে ১৩ মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত ১২৬ জনের নাম রয়েছে। এঁদের মধ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মিঠুন চক্রবর্তী, শুভেন্দু অধিকারী, নিশীথ প্রামাণিক, রাজু বিস্ট, দোলা সেন, দেব, মল্লিকার্জুন খাড়গে, মানিক সাহা, অনুরাগ সিং ঠাকুর, ডেরেক ও’ব্রায়েন, মলয় ঘটক, অরূপ বিশ্বাস সহ কয়েকজন রাজ্যসভার সদস্য, বিচারপতি, প্রতিবেশী রাজ্যের মন্ত্রীরাও রয়েছেন। এঁরা কেউ চার্টার্ডে এসেছেন। আবার কেউ হেলিকপ্টারে এসেছেন।
অন্যদিকে অ্যাপ্রনে মাত্র দুটি হেলিকপ্টার রাখার জন্য জায়গা রয়েছে। সেখানে আরও হেলিকপ্টার এলে সমস্যা হয়। এপ্রসঙ্গে হিমাদ্রির বক্তব্য, ‘নির্দিষ্ট শিডিউল ছাড়া বিমান বা হেলিকপ্টার এখানে এলে সমস্যা হচ্ছে ঠিকই। কিন্তু কিছু করার নেই। ছোট বিমানবন্দর মেনে নিতেই হয়। তবে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বা প্রতিরক্ষামন্ত্রী এখানে এলে বায়ুসেনার আলফা জোনে নামেন। সেখানে যথেষ্ট জায়গা রয়েছে। তাই কোনও সমস্যা হয় না।’