নাগরাকাটা: একলপ্তে তিন ‘উপহার’। ক্ষুদ্র চা চাষিদের কিষান ক্রেডিট কার্ড, পিএম ফসল বিমা যোজনা ও কৃষি সিঞ্চাই যোজনায় আনার কথা ঘোষণা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শনিবার কাওয়াখালির জনসভা থেকে তিনি বলেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের ৪০ হাজার ক্ষুদ্র চা চাষির উন্নয়ন বিজেপির অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে। ওই ক্ষুদ্র চা চাষিরা প্রত্যেকেই উত্তরবঙ্গের।’ প্রধানমন্ত্রীর মুখে এসব শুনে খুশির হাওয়া ক্ষুদ্র চা চাষি মহলে।
জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক ও কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান স্মল টি গ্রোয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের (সিস্টা) সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর বক্তব্য, ‘৫ বছর ধরে এই ৩ প্রকল্পের আওতায় আনার দাবি কেন্দ্রের কাছে জানানো হয়েছে। অবশেষে খোদ প্রধানমন্ত্রী এর ঘোষণা করায় আমরা আশ্বস্ত। এবারে কাঁচা চা পাতার জন্য ন্যূনতম সহায়কমূল্য বেঁধে দেওয়া হলে উত্তরবঙ্গ সহ গোটা দেশের কয়েক লক্ষ ক্ষুদ্র চা চাষি উপকৃত হবেন।’
তাঁর সরকার কী কী করেছে, তার খতিয়ান এদিন তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। বিনামূল্যের র্যাশন আরও ৫ বছর থাকবে, একথা জানিয়ে তিনি বলেছেন, ‘এর সুফল চা শ্রমিকরাও পাবেন।’ ভরতুকিতে দেওয়া উজ্জ্বলা প্রকল্প (রান্নার গ্যাস)-র সুফল বাগানের মহিলা শ্রমিকরাও পাচ্ছেন, সেটা উল্লেখ করেন। কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বিমা ‘আয়ুষ্মান ভারত’ এরাজ্যে চালু করতে চাইলেও, রাজ্যের বাধায় করা যায়নি, এই অভিযোগে এদিন সরব হন মোদি। চা শ্রমিকদের মজুরি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট মারফত দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রের উদ্যোগে বাস্তবায়িত হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে রাজনৈতিক মহল মনে করছে, শিয়রে লোকসভা নির্বাচন। ভোট বৈতরণি পার হতেই ক্ষুদ্র চা চাষিদের জন্য একলপ্তে তিন ‘উপহার’ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিকে উত্তরবঙ্গের ক্ষুদ্র চা চাষিদের সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, কিষান ক্রেডিট কার্ডের আওতায় এলে ঋণের জন্য দালালদের খপ্পরে পড়া বন্ধ হবে। জলবায়ু আমূল বদলে যাওয়ার ফলে কয়েক বছর ধরে কাঁচা পাতার উৎপাদন ব্যাপকভাবে মার খাচ্ছে। সেই ক্ষতি পূরণে ফসল বিমা যোজনা সাহায্য করবে। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনার মাধ্যমে ক্ষুদ্র চা চাষিরা বিনামূল্যে সেচের উপকরণ পাবেন।
যদিও বড় চা বাগানগুলির জন্য এদিন মোদি আলাদা করে কিছু বলেননি। তবে গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শিল্প বাণিজ্য মন্ত্রক ২০২৪-’২৫ এবং ২০২৫-’২৬ অর্থবর্ষে চায়ের জন্য আর্থিক সহযোগিতার পরিমাণ একধাক্কায় ৮২ শতাংশ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে। টি ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড প্রোমোশন স্কিমে ওই টাকা খরচ করা হবে বলে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। দার্জিলিং চায়ের মতো জিআই তকমা পাওয়া দেশের অন্য চায়ের রপ্তানি বাড়ানোর জন্য প্রচারাভিযানে বরাদ্দ ১০ গুণ বাড়িয়ে ৭২.৪২ কোটি টাকা করার কথা বলা হয়েছে।