চাঁচল: মহিলার দেহ শনাক্ত করা নিয়ে দিনভর চলল নাটক। শেষে মৃতার পরিচয় জানতে ডিএনএ টেস্টের পথে হাঁটতে চলেছে প্রশাসন। রবিবার সকালে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কুশিদার নসরপুর চোচপাড়া বাঁধ এলাকায় এক অজ্ঞাত পরিচয় মহিলার ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়। মুখ পোড়ানো ছিল অ্যাসিড দিয়ে। শরীরে ছিল একাধিক ছুরির কোপ। দেহের আশপাশে পড়েছিল মদের বোতল এবং গর্ভনিরোধকের প্যাকেট। স্থানীয়দের অনুমান, ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে ওই মহিলাকে।
এদিকে, রবিবার রাতেই চাঁচল থানার খরবা গ্রাম পঞ্চায়েতের নিখোঁজ এক গৃহবধূর পরিবারের সদস্যরা হরিশ্চন্দ্রপুর থানায় যান। দেহের ছবি দেখে তাঁদের অনুমান, ওই দেহ তাঁদের বধূর। মেয়ের বাবার বাড়ির লোকেরাও অনুমান করেন, ওই দেহ তাঁদের মেয়ের। এরপর সোমবার সকালে নিখোঁজ গৃহবধূর স্বামী মালদা মেডিকেল কলেজে যান। সামনাসামনি দেখার পর স্বামীর দাবি, এই দেহ তাঁর স্ত্রীর নয়।
স্বামীর বক্তব্য, “বুধবার আমার স্ত্রী যখন বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল, তখন এই পোশাক পরে ছিল না। হাতের চুড়ি, গায়ের রং বাঁ-পায়ের আঙুলেরও কোনও মিল নেই। এই দেহ আমার স্ত্রীর নয়।” স্বামী বেরিয়ে যাওয়ার পরই মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে যান নিখোঁজ বধূর মা। তিনি দেহ দেখে দাবি করেন, সেটা তাঁর মেয়েরই। নিখোঁজ গৃহবধূর মায়ের বক্তব্য, “বুধবার থেকে আমার মেয়ে নিখোঁজ। আমার মেয়ের চুল, পেটের কাঁটা দাগ, হাতের চুড়ি মিলে যাচ্ছে।” দেহ শনাক্ত করা নিয়ে দুই পরিবারের এই টানাপোড়েনের কারণে ডিএনএ টেস্টের পথে হাঁটছে প্রশাসন। পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে হরিশচন্দ্রপুর থানা।
অন্যদিকে, স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, ছয় বছর আগে গৃহবধূর বিয়ে হয়। স্বামী বিশেষভাবে সক্ষম। তাঁদের কোনও সন্তান নেই। প্রায়ই অশান্তি লেগে থাকত স্বামী-স্ত্রীর। বুধবার বাবারবাড়ি যাওয়ার নাম করে গৃহবধূ শ্বশুরবাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। তারপর থেকেই তাঁর আর কোনও খোঁজ মেলেনি। প্রশ্ন উঠছে, দেহ যদি ওই নিখোঁজ গৃহবধূরই হয়ে থাকে, তবে শ্বশুরবাড়ির এলাকা থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে তিনি কেন গিয়েছিলেন? গোটা ঘটনায় রহস্য দানা বাঁধছে।
গৃহবধূর শ্বশুরবাড়ির গ্রামেরই একজনের দাবি, “ওই মহিলার সঙ্গে হয়তো কারও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। এর আগে এনিয়ে সালিশিও হয়েছিল। সেই সব কারণেও উনি বাড়ি ছেড়ে যেতে পারেন। কিন্তু ওই দেহ কার সেটা পরিবারের লোক এবং পুলিশই বলতে পারবে।”