উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রীতিমতো সময়সীমা বেঁধে দিয়ে মালদ্বীপ (Maldive) থেকে সেনা সরিয়ে নেওয়ার ‘আর্জি’ জানিয়েছে মহম্মদ মুইজ্জুর সরকার (Mooijju government’s)। এই আবহে বিবৃতি দিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করল নয়াদিল্লি (New Delhi)। মহম্মদ মুইজ্জুর সরকারের এমন আর্জির বিষয়ে পালটা বিবৃতি দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক (Ministry of External Affairs)। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মালদ্বীপে দু’দেশের মধ্যে বিমান চলাচল জারি রাখা জরুরি মানবিক কারণে।
আলোচনার মাধ্যমে মালদ্বীপ ভারতের মধ্যে রাজনৈতিক অস্থিরতা (political unrest)মিটিয়ে ফেলতে চাইছে বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে লেখা হয়েছে, “মালদ্বীপের মানুষের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছে দিতে ভারতীয় বিমানগুলির চলাচল জারি রাখা জরুরি। এবং এই কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে উভয় পক্ষই একটি সমাধানসূত্রে পৌঁছনোর চেষ্টা করছে।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, মালদ্বীপ এবং ভারতের সম্মতিক্রমে একটি নির্দিষ্ট দিন বেছে নিয়ে পরবর্তী আলোচনা করা হবে। প্রসঙ্গত, বায়ুসেনার বেশ কয়েকটি বিমান মালদ্বীপের প্রান্তবর্তী অঞ্চলগুলিতে ওষুধ এবং ত্রাণসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ার কাজ করে। এদিকে ভারতের বিবৃতি জারর পরই মালদ্বীপ থেকে ভারতের সেনা সরানোর বিষয়ে দিল্লির সঙ্গে আলোচনা করতে উচ্চপর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে মহম্মদ মুইজ্জুর সরকার। এই বিষয়ে ভারতও সম্মতি দিয়েছে।
উল্লেখ্য, নভেম্বর মাসে নাম না করে ভারতকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দিয়ে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু (Maldives President Mooijju) বলেছিলেন, ‘‘আমাদের দেশের মাটি থেকে সমস্ত বিদেশি সেনাকে আমরা ফেরত পাঠাব।’’ এ ক্ষেত্রে মুইজ্জু নাম না-করলেও ভারতকে নিশানা করেছেন তা স্পষ্ট। কারণ, ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক এবং শিল্পক্ষেত্রের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিল ভারতীয় সেনা। মুইজ্জুর সচিবালয়ের শীর্ষ আধিকারিক আবদুল্লা নাজিম ইব্রাহিম সম্প্রতি সংবাদ মাধ্যমে এক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, “ভারতীয় সেনারা মালদ্বীপে থাকতে পারবেন না। কারণ এটাই প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু এবং তাঁর সরকারের সিদ্ধান্ত। ১৫ মার্চের মধ্যে সেনা সরানোর জন্য ভারতকে আর্জি জানানো হয়েছে।” তবে চলতি বিতর্কের আবহে মলদ্বীপের এই সময় বেঁধে দিয়ে সেনা সরাতে বলার ‘আর্জি’কে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে কূটনৈতিকমহল মনে করছে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ‘চিনপন্থী’ বলে পরিচিত। গত সপ্তাহেই পাঁচ দিনের জন্য চিন সফরে গিয়েছিলেন তিনি। গত বুধবার জিনপিংয়ের সঙ্গে রাজধানী বেজিংয়ে বৈঠক করেন মুইজ্জু। চিনের প্রেসিডেন্টও মুইজ্জুকে সবরকম সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছে বলেও খবর। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে ওই বৈঠকেই বেজিংকে তাঁদের ‘পুরোনো বন্ধু এবং ঘনিষ্ঠতম সহযোগী’ বলেন মুইজ্জু। চিন থেকে দেশে ফিরেই শনিবার মুইজ্জু হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ভারতকে।