মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ, আলিপুরদুয়ার: রেল হাসপাতালের কাজ শুরু কবে হবে? এটাই এখন আলিপুরদুয়ারে বহুল চর্চিত প্রশ্নগুলির মধ্যে অন্যতম। হাসপাতালের কথা তো আগেই ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী জন বারলা। তা সত্ত্বেও আলিপুরদুয়ারে রেলের জমিতে প্রস্তাবিত হাসপাতালের শিলান্যাস অনুষ্ঠান শেষপর্যন্ত হল না। মঞ্চ বাঁধার কাজ পর্যন্ত হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষপর্যন্ত দিল্লি থেকে সবুজ সংকেত না আসায় প্যান্ডেল করার পরেও হল না শিলান্যাস অনুষ্ঠান। এতে হতাশ আমজনতা। বিরোধীরা তো ইতিমধ্যেই লোকসভা ভোটের প্রচারে বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দাগতে শুরু করেছেন। যদিও বিজেপির প্রার্থী মনোজ টিগ্গা বলেন, ‘বিজেপি যা বলে সেটা করে। কারও ঘাবড়ানোর কোনও কারণ নেই। সাময়িক কারণে শিলান্যাস ভোটের আগে না হলেও পরে অবশ্যই হাসপাতাল হবে।’
এদিকে, উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনের ডিআরএম অমরজিৎ গৌতম বলেন, ‘কয়েকদিন আগে প্রস্তাবিত হাসপাতালের শিলান্যাস হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনও নির্দেশিকা না আসায় ওই অনুষ্ঠান হয়নি।’ জন বারলার ঘোষিত প্রস্তাবিত হাসপাতালের শিলান্যাস না হওয়ায় সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়া বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। তিনি বলেন, ‘জন বারলা যে ভাঁওতা দিয়ে আসছিলেন, সেটা আগেই বলেছিলাম। শিলান্যাস অনুষ্ঠান না হওয়ায় সেটা এখন প্রমাণিত। বিজেপির সাংসদ কোনও কাজ করেননি, সেটা সকলেই জানেন, ভোটের আগে একটা গল্প করে ফের রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চেয়েছিল বিজেপি, কিন্তু আলিপুরদুয়ারের মানুষ এখন বুঝে গিয়েছেন, ওদের কথা ও কাজে কোনও মিল নেই।’
কয়েকদিন আগেই প্রস্তাবিত হাসপাতালের জায়গার পাশে অনুষ্ঠান মঞ্চ তৈরি করা হয়। বারবার উদ্বোধনের দিন বদলের কথাও শোনা যায়। কিন্তু শেষপর্যন্ত নির্বাচনি আচরণবিধি চালু হওয়ায় ওই সম্ভবনা আর নেই। যে অনুষ্ঠান মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিল, সেটি শনিবার খুলে নেওয়া হয়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা হতাশ হয়েছেন। আলিপুরদুয়ার শহরের বাসিন্দা সুদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘আদৌ ওই প্রস্তাবিত হাসপাতাল বাস্তবে হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।’ অনেকেই বিজেপির নেতাদের কাছে হাসপাতালের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। কিন্তু বিজেপির স্থানীয় নেতারাও শেষপর্যন্ত আশার আলো দেখাতে পারেননি। ফলে লোকসভা ভোটে বিজেপির কাছে কেন্দ্রীয় হাসপাতাল তৈরির ইস্যুকে হাতিয়ার করে বাড়তি যে সুবিধা পাওয়ার আশা ছিল, সেটা খানিকটা হলেও ধাক্কা খেয়েছে।