সৌরভ দেব ও বিদেশ বসু, জলপাইগুড়ি ও মালবাজার: গত কয়েকদিনে জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলায় এক লাফে আলুর দাম বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা (Potato Price Hike)। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শাকসবজির দামও। ব্যবসায়ী মহল সূত্রের খবর, আগামীদিনে আরও বাড়তে পারে আলু সহ অন্যান্য শাকসবজির দাম। স্বাভাবিকভাবেই দুশ্চিন্তা বাড়ছে মধ্যবিত্তদের।
জলপাইগুড়ি শহর এবং মাল (Malbazar) শহরের দৈনিক বাজার ও হাটখোলায় গত কয়েকদিনে লাল আলু বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে। সাদা আলু বা জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে গড়ে ২৫ টাকা কেজি দরে। দিনপনেরো আগেই লাল আলু বাজারে বিক্রি হয়েছে ২০ টাকা প্রতি কেজি দরে। আচমকাই আলুর মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে সাধারণ বাসিন্দাদের। সমস্যায় পড়তে হয়েছে হোটেল ব্যবসায়ীদেরও। মাল শহরের সবজি ব্যবসায়ী রিংকু প্রসাদ বলেন, ‘পাইকারি বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই আলু বিক্রি করতে হচ্ছে। যতটুকু জানতে পেরেছি, বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে আলু রপ্তানি হওয়ার কারণেই এদেশে আলুর জোগানে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। তাই দাম বেড়েছে।’ ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন ও জাকির হোসেনের কথায়, ‘পাইকারি বাজারেই এক লাফে আলুর দাম বেড়েছে প্রায় ১০ টাকা। ফলে খুচরো বাজারেও দাম বেড়েছে। বেশি দামে আলু বিক্রি করতে আমাদেরও অস্বস্তি বোধ হচ্ছে।’ জলপাইগুড়ি শহরের আলু ব্যবসায়ী দিলীপ সাহা বলেন, ‘মহাজনের কাছ থেকে আমরাই আলু কিনছি কেজি প্রতি ২৫ টাকা দরে। এক বস্তা আলুতে বেশ কিছু আলু পচা থাকে। তাছাড়া সব আলু একই মাপেরও থাকে না। ক্রেতারা বড় আলু বেছে নিলে ছোট আলু কেনার মতো গ্রাহক থাকে না। তাই কেজি প্রতি ৩০ টাকার কমে আলু বিক্রি করা ছাড়া উপায় থাকে না।’
এদিকে গত কয়েকদিনে আলু ছাড়া অন্যান্য শাকসবজির দামও বেড়েছে অনেকটাই। সম্প্রতি ময়নাগুড়ি সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘূর্ণিঝড় ও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে ফসলেরও ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক হারে। এই ক্ষতির প্রভাব পড়তে দেখা গিয়েছে সবজির দামেও। মাল শহর সংলগ্ন ক্ষুদিরামপল্লি এলাকার বাসিন্দা লক্ষ্মণ রায় বলেন, ‘বাজারে শাকসবজির এমন চড়া দাম থাকলে আমাদের খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। টান পড়ে মাসিক বাজেটে। অধিকাংশ রান্নাতেই আলু প্রয়োজন। তাই আলুর দাম বাড়তে থাকলে দুশ্চিন্তা তো হবেই।’ জলপাইগুড়ি শহরের হোটেল ব্যবসায়ী শংকর দাসের কথায়, ‘দাম বেড়ে যাওয়ায় তরকারিতে আলুর পরিমাণ কমাতে বাধ্য হয়েছি।’
উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জগদীশ সরকার বলেন, ‘চলতি বছর আলুর উৎপাদন সর্বত্রই ২০-২৫ শতাংশ কম হয়েছে। ফলন কমে যাওয়া চাহিদা পূরণে ঘাটতি থাকছে। তাই দাম সামান্য বেড়েছে।’ এ বিষয়ে মাল পুরসভার বাজার বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কাউন্সিলার সরিতা গিরি বলেন, ‘আলু এবং শাকসবজির দাম সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে দেখছি।’ সূত্রের খবর, বর্তমানে হিমঘরগুলিতে প্রচুর পরিমাণে আলু মজুত রয়েছে। হিমঘর থেকে আলু বের হলে এই দাম কিছুটা কমতে পারে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।