নয়াদিল্লি: আসন্ন লোকসভা ভোটে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের কোনও প্রভাব পড়বে না। রাহুল গান্ধির ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’ শুধু সময় নষ্ট। বরং বিরোধীরা এখন থেকে ২০২৯-এর লোকসভা নির্বাচনের (Lok Sabha Election) প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করুক। শনিবার একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে ভোট কুশলী প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishor) এমন মন্তব্য করেন। একই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দেন, পশ্চিমবঙ্গে ইতিমধ্যে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছেন, রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সমঝোতা হবে না। তাঁর দাবি, ১৮তম লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির (BJP) আগের থেকেও ভালো ফল করবে। সন্দেশখালির ঘটনা শাসকদলের (TMC) বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার পালে বাড়তি হাওয়া জোগাবে বলে তিনি মনে করেন।
উল্লেখ্য, ২০২১-এর বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ভোট কুশলী ছিলেন পিকে। সে সময় বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা বাংলায় এসে যতই ‘দুশো পার’-এর হুঁশিয়ারি দিন না কেন তখন প্রশান্ত স্পষ্ট চ্যালেঞ্জ করে বলেছিলেন, ওরা একশো পার করলে তিনি ভোট পরামর্শ দেওয়া ছেড়ে দেবেন। ভোটের ফলে দেখা যায়, বিজেপি ৭৭-এ মুখ থুবড়ে পড়ে। এদিন তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ‘বিধানসভা ভোটের ফল দেখে লোকসভার আসনপ্রাপ্তির বিষয়টি বিবেচনা করা যায় না।’
বর্তমানে বাংলার সঙ্গে তাঁর সরাসরি কোনও যোগাযোগ নেই বলেও তিনি স্বীকার করেন। জানান, বাংলার রাজনীতি নিয়ে এই মুহূর্তে তার কোনও ‘ফার্স্ট হ্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স’ নেই। তাঁর কথায়, ‘সন্দেশখালি নিয়ে যে যাই বলুক এতে, শাসকদলের ক্ষতি হবেই। বাংলায় বিজেপি ক্রমাগত বাড়ছে।’
তিনি জানান, অনেকে রাজধানীতে বসে বাংলায় বিজেপি শেষ বলে মনে করছেন। কিন্তু তাঁর দাবি, এটি ভ্রান্ত ধারণা। বাংলায় বিজেপি বাড়ছে। প্রায় তিনটি টার্মে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ্যমন্ত্রিত্বের কারণে রাজ্যে একটি প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছে। এটা ক্রমেই বাড়ছে। এই ঝড়ে তৃণমূলের পায়ের নীচে মাটি আলগা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তাঁর দাবি, বাংলায় বিজেপি এবার যথেষ্ট ভালো ফল করবে।
উল্লেখ্য, প্রশান্তের সঙ্গে বাংলার সরাসরি যোগাযোগ না থাকলেও তাঁরই সংস্থা আইপ্যাক এখনও তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। তবে প্রশান্তের এমন বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে রাজ্যের শাসক বা বিরোধী দলের কোনও নেতা-নেত্রী এই কপি প্রেসে যাওয়া পর্যন্ত কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এদিন তিনি রাহুল গান্ধির তীব্র সমালোচনা করে বলেন, দ্বিতীর পর্যায়ের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’র জন্য ওয়াডনারের সাংসদ ভুল সময় বেছেছেন। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের একজন গুরুত্বপূর্ণ শরিক হিসাবে এসময় তাঁর দিল্লিতে থাকার কথা। কারণ সেখানে তিনি জোট শরিকদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় বৈঠক, আসন রফা, প্রচারের স্ট্রাটেজি ইত্যাদি নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। সেনাপতি যদি যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে থাকেন তাহলে সেনাদের মনোবল ভাঙতে বাধ্য। এখানেও সেই একই ঘটনার বহিঃপ্রকাশ দেখা যাচ্ছে।