মনোজ বর্মন, শীতলকুচি: ২০২২ সালে কোচবিহারের আচার্য ব্রজেন্দ্রনাথ শীল কলেজ থেকে গণিতে বিএসসি পাশ করেন শীতলকুচির আকাশ আলম। তারপর থেকেই শুরু হয়েছিল প্রস্তুতি। বাবা ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিক হিসেবে কর্মরত। বাড়িতে মা একা থাকেন। এক বোনের বিয়ে হয়েছে। সংসারের খরচ সামলাতে পড়াশোনার পাশাপাশি মুড়ির দোকান চালাতেন তিনি।
রাস্তার ওপর সেই অস্থায়ী দোকানে যখন ক্রেতাদের ভিড় থাকত না, তখন বই খুলে চোখ বুলিয়ে নিতেন। ইচ্ছেশক্তির জোরে প্রতিকূল পরিস্থিতিকে সঙ্গী করে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি জয়েন্ট এডমিশন টেস্ট ফর মাস্টার্স (আইআইটি জ্যাম)-এ নজরকাড়া ফল করলেন লালবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের আমতলার ওই তরুণ। ২২ মার্চ সর্বভারতীয় স্তরের এই পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা হয়। সেখানে সারাদেশে তাঁর র্যাংক ১১৭। ১১ ফেব্রুয়ারি আয়োজিত এই প্রবেশিকা পরীক্ষায় ১৪১৪৬ জন অংশগ্রহণ করেছিলেন।
আকাশের ছাত্রজীবন শুরু বিদ্যাসাগর শিশুনিকেতন থেকে। এরপর বড় মরিচা দেলোয়ার হোসেন উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পাশ। পরে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে মাথাভাঙ্গা বিবেকানন্দ বিদ্যামন্দিরে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হন তিনি। সেখান থেকে উচ্চমাধ্যমিকে সফলতার সঙ্গে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে এবিএন শীল কলেজ থেকে ৮৯.৬৭ শতাংশ নম্বর নিয়ে ২০২২ সালে অঙ্কে বিএসসি পাশ। আকাশের ইচ্ছে, মুম্বইয়ের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজিতে পড়াশোনা করা।
এদিন শীতলকুচির কৃতী বললেন, ‘নিজের পড়াশোনা চালানোর খরচ নিজেকে জোগাড় করতে হয়। এখন বাইরে গিয়ে কীভাবে তা সম্ভব, বুঝে উঠতে পারছি না।’ আকাশের মা রোশনারা বিবি ছেলের লেখাপড়ার খরচ নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। তাঁর আবেদন, সরকারি বা বেসরকারি উদ্যোগে আর্থিক সহযোগিতা পেলে উপকার হয়।