জ্যোতি সরকার, জলপাইগুড়ি, ২৯ এপ্রিল : নর্থবেঙ্গল টি অকশন সেন্টার ওরফে জলপাইগুড়ি চা নিলামকেন্দ্রের ভবিষ্যৎ অথই জলে।
ভবনের যে অংশে চা নিলামকেন্দ্র রয়েছে সেই অংশ থেকে চা নিলামকেন্দ্রের সমস্ত আসবাব এবং প্রয়োজনীয় নথি সরিয়ে নিয়ে দেরি না করে ভবন ছেড়ে দিতে হবে বলে ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (আইটিপিএ) চা নিলাম কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে সোমবার জানিয়ে দেয়। আইটিপিএ ভবনে ২০০৫ সাল থেকে চা নিলামকেন্দ্রটি রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে অবশ্য এই কেন্দ্রে চা নিলাম পুরোপুরিভাবে বন্ধ। কেন্দ্রটিকে পুনরায় চালু করার জন্য টি বোর্ড বিশেষ বিশেষজ্ঞ দল পাঠিয়ে বাস্তব অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে গিয়েছে। সেই পর্যবেক্ষণের পর চার মাস পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু টি বোর্ড কোনও পদক্ষেপই করেনি।
কী কারণে এবারে সমস্যা? চা নিলামকেন্দ্র থেকে আসবাবপত্র চুরি যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আইটিপিএ’র সঙ্গে নর্থ বেঙ্গল টি অকশন সেন্টার পরিচালন কমিটির বিরোধের সূত্রপাত হয়। আসবাবপত্র চুরি যাবার ঘটনা জানিয়ে নিলামকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ আইটিপিএ কর্তপক্ষকে চিঠি দেয়। চা নিলামকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের নিজস্ব কর্মী থাকায় নজরদারির দায়িত্ব তাদের বলে আইটিপিএ কর্তৃপক্ষ পালটা দাবি জানায়। পারস্পরিক চাপানউতোরে সমস্যা চরমে ওঠে।
আইটিপিএর শ্রম উপদেষ্টা অমিতাংশু চক্রবর্তী সোমবার নর্থ বেঙ্গল টি অকশন সেন্টারের চেয়ারম্যানকে চিঠি লিখে জানান, সম্পূর্ণ মৌখিক কথার ওপর ভিত্তি করে আইটিপিএ ভবনের একাংশকে চা নিলামকেন্দ্রে প্রশাসনিক কাজে ব্যবহারের জন্য দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে আইটিপিএ’র আর্থিক অবস্থা ভালো নয় বলে জানিয়ে ভবন ফাঁকা করে দিতে বলা হয়েছে। অপরদিকে নর্থ বেঙ্গল টি অকশন কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, জলপাইগুড়িতে চা নিলামকেন্দ্র হবার সময় আইটিপিএ ভবন সংস্কার করে দেবার পাশাপাশি গার্ডওয়াল তৈরি করে দিতে আইটিপিএ কর্তৃপক্ষ চা নিলামকেন্দ্র কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব দেয়। প্রস্তাবটি মেনে নিয়ে চা নিলাম কর্তৃপক্ষ ৩৫ লক্ষ টাকা খরচ করে ভবন সংস্কার এবং গার্ডওয়াল তৈরি করে দেয়। এ ব্যাপারে আইটিপিএ’র সভায় প্রস্তাবটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে চা নিলাম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
নর্থ বেঙ্গল টি অকশন কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান পুরোজিৎ বক্সীগুপ্ত বলেন, ‘চা নিলামকেন্দ্রকে কর্মচঞ্চল করা আমাদের লক্ষ্য। টি বোর্ডের প্রতিনিধিরা জলপাইগুড়ি ঘুরে গিয়েছেন। দ্রুত চা নিলামকেন্দ্র চালু হোক আমরা চাই। নিলামকেন্দ্রকে নিয়ে কোনও বিতর্ক হওয়া উচিত নয়। একে সচল করাই সকলের লক্ষ্য হওয়া উচিত।’