আয়ুষ্মান চক্রবর্তী, আলিপুরদুয়ার: প্রার্থনা সেরে ক্লাসরুমে ঢোকার আগেই থমকে দাঁড়াল সায়ন, অর্পিতা, সুস্মিতারা। গমগমে সাউন্ড বক্সে (Sound Box) ভর করে তাদের কানে ভেসে আসছে ‘আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে।’ এমন অভিজ্ঞতা কিন্তু তাদের কাছে একেবারেই নতুন। এবার থেকে প্রার্থনা (Prayer) সেরে ক্লাস শুরুর আগে ও টিফিন পিরিয়ডে পড়ুয়াদের রবীন্দ্রসংগীত ও রুচিসম্মত আধুনিক বাংলা গান শোনাবার ব্যবস্থা করেছে শান্তিদেবী হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ।
আলিপুরদুয়ার শহরের এই স্কুলটির পড়ুয়া সংখ্যা চারশোর কিছু বেশি। সেই শ-চারেক পড়ুয়ার মধ্যে যাতে বাংলার সংস্কৃতি সম্পর্কে ধারণা ও ভালোবাসা জন্ম নেয়, সেদিকে লক্ষ্য রেখেই মাতৃভাষা দিবসের দু’দিন আগে সোমবার থেকে এই উদ্যোগ। জানালেন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক (Teacher)।
প্রথম দিন সায়ন সরকার, অর্পিতা দাস, সুস্মিতা রায়, রাজেশ কুর্মিরা গান শুনে একটু অবাকই হয়ে গিয়েছিল। পরে অবশ্য তারাও বিষয়টি বেশ উপভোগ করে। অনেকে আবার গুনগুনও করছিল গানের লাইনগুলো। এদিন আগুনের পরশমণির পাশাপাশি ফাগুন হাওয়ায় হাওয়ায় গানটিও শোনানো হয়েছে। আস্তে আস্তে মান্না দে, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সহ অন্যান্য জনপ্রিয় সংগীতশিল্পীদের গানও বাজবে। জানিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিশ্বজিৎ মজুমদার বলেন, ‘সংগীতের বিশাল ঐতিহ্য পড়ুয়াদের মধ্যে তুলে ধরতে চাইছি আমরা। গান মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। পাশাপাশি পড়াশোনায় পড়ুয়াদের মনঃসংযোগও বাড়বে। সেসব কথা ভেবেই এই উদ্যোগ।’
অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়া কোয়েল দাস নিজেই গান গাইতে খুব ভালোবাসে। জানাল, ‘আমাদের স্কুলে এরকম একটা উদ্যোগ নেওয়া হল ভেবে খুব ভালো লাগছে। গান শুনলে মন ভালো হয়ে যায়।’ দশম শ্রেণির শ্রাবণী বর্মন, রূপা সাহা, অর্পিতা দাসদেরও একই কথা। একবাক্যে জানাল, আমাদের সকলেরই গান শুনতে ভালো লাগে। পড়ার ফাঁকে গান বাজালে বাংলা ভাষার চর্চা হবে। আর আমরাও ভালো ভালো গান শুনতে পাব। মন ভালো থাকার কথা বলেছে ষষ্ঠ শ্রেণির অভি দে, সপ্তম শ্রেণির রাজেশ কুর্মিরাও।