শিলিগুড়িঃ সকালে শহরের প্রধান রাস্তাগুলোতে পা ফেলা দায়। অথচ রাত বাড়তেই সেই রাস্তাগুলোই হয়ে দাঁড়াচ্ছে ‘রেসিং ট্র্যাক’(Racing tracks)। গত মাসে শহরের রাস্তায় অতিরিক্ত গতির কারণে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা (Road accident) ঘটেছে, যা এই বিষয়টাকেই সিলমোহর দিচ্ছে। বৃহস্পতিবার রাতে একটি গাড়ির গতি এতটাই ছিল যে, ডিভাইডারে ধাক্কা মারার পর সেটি দুইবার উলটে যায়। তারপর রাস্তার আরেকপাশে দাঁড়িয়ে থাকা মুকেশ মিত্তাল সহ তাঁর বন্ধুদের দিকে চলে আসে। প্রাণ যায় মুকেশের। শুধু এই ঘটনাই নয়, গত মাসের এক তারিখ সেবক রোডে একটি গাড়ি উলটে যায়। যদিও সে যাত্রায় প্রাণহানির কোনও ঘটনা ঘটেনি।
এদিন ভক্তিনগর থানায় গাড়ির চালকদের ধরার দাবি জানাতে আসেন হংকং মার্কেটের (Hongkong market) সাধারণ সম্পাদক প্রাণতোষ সাহা। এব্যাপারেই নিজের আশঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘রাতের শহরের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হয়ে যাচ্ছে। রাস্তার ধারে থাকা গাড়িতে আরেক গাড়ি ধাক্কা মারছে। পুলিশের তো ব্যাপারটা দেখা উচিত।’
সেবক রোডের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ রয়েছে বলে মনে করছেন শহরের বাসিন্দারা। ওই রাস্তায় সবচেয়ে বেশি পাব, বার থাকায় তার একটা প্রভাব রয়েছে কি না, উঠছে প্রশ্ন। সেবক রোড এলাকার কাউন্সিলার মেয়র পারিষদ মানিক দে বিষয়টা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। তিনি বলেন, ‘বিহারে মদ বিক্রি বন্ধ হওয়ার পর থেকে অনেকে শিলিগুড়িতে আসছে শুনেছি। ওরা তো খাবেই। তবে পাব, বারগুলো চলার ক্ষেত্রে সরকারি যে নিয়ম রয়েছে, তা মানা হচ্ছে কি না দেখা উচিত।’ কলকাতার মতন শিলিগুড়িতেও সিসিটিভির মাধ্যমে গাড়ির অতিরিক্ত গতির উপর নজরদারি চালিয়ে জরিমানা করার কথা জানিয়েছেন তিনি।
শুধু সেবক রোডই নয়, সম্প্রতি জলপাই মোড়ে বিবাদী চকে অতিরিক্ত গতিতে যাওয়া একটি গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা মারে। সে ঘটনায় চালক পালিয়ে যায়। রাতে অতিরিক্ত গতির ফলে এই ধরনের দুর্ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের নজরদারি নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। রাতে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছেন অনেকেই। তার ফলেই এমন ঘটনা ঘটছে বলে ক্ষোভপ্রকাশ করছে শহরের বিভিন্ন মহল।
যদিও রাতের শহরে নিয়মিত নজরদারি চালানো হয় বলে দাবি করেছেন শিলিগুড়ি মেট্রোপলিটান পুলিশের ডিসিপি (ট্রাফিক) অভিষেক গুপ্ত। তিনি বলেন, ‘মদ্যপ অবস্থায় যাতে কেউ গাড়ি না চালায়, তারজন্য নিয়মিত ব্রেথ অ্যানালাইজার দিয়ে পরীক্ষা করা হচ্ছে। ব্যারিয়ার লাগানো হচ্ছে রাস্তায়।’ তবে এতকিছুর মধ্যেও রাতের শহরে অতিরিক্ত গতির কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা ক্রমে বেড়েই চলেছে।