মালদাঃ ৩১ জানুয়ারি মালদায় (Malda) পৌঁছচ্ছে রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi) ভারত জোরো ন্যায় যাত্রা। সেই দিনই মালদায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর হাই ভোল্টেজ বুধবারকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই ঊর্ধ্বমুখী জেলার রাজনীতির পারদ। দুই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে ক্রমশ দূরত্ব বাড়ছে ইন্ডিয়া জোটের দুই শরিক কংগ্রেস এবং তৃণমূলের মধ্যে। ঠিক যেমন কেন্দ্রীয় স্তরে ইন্ডিয়া জোটে জট তৈরি হয়েছে। তেমন এই জেলাতেও এলোমেলো জোটের সমীকরণ।
রাহুল গান্ধির জেলা সফরে আসার আগে থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক সভায় কংগ্রেস তথা রাহুলকে কটাক্ষ করছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। কখনও জেলা সভাপতি এই জেলায় কংগ্রেসকে ভোট কাটোয়া বা বিজেপির বি টিম বলছেন। কখনও তৃণমূল নেতারা রাহুলকে ‘পাপ্পু’ বলে কটাক্ষ করছেন। আবার কখনও জেলা তৃণমূল মুখপাত্র রাহুল গান্ধির সাফল্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে বসছেন। অন্যদিকে পাল্টা তোপ দাগতে ছাড়ছে না জেলা কংগ্রেসও। কংগ্রেসের মতে তৃণমূল নেতারা যদি মনে করেন রাহুল গান্ধির কর্মসূচির দিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলাতে এলে রাহুলের কর্মসূচি ব্যাহত হবে, তবে তারা ভুল ভাবছেন। মালদার মানুষ রাহুলকে দেখার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। রাহুলের কর্মসূচিতে জনপ্লাবন হবে। সঙ্গে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের মন্তব্য কে দুর্ভাগ্যজনক বলছে কংগ্রেস। প্রশাসনিক অসহযোগিতার অভিযোগ তুলছেন তারা।
৩১ জানুয়ারি সকাল ১১ টা থেকে মালদা জেলায় শুরু হচ্ছে রাহুলের ভারত জোরো ন্যায় যাত্রা। তেলজান্না মোড়, ভালুকা রোড হয়ে বাসে চেপে ১৮ কিমি ন্যায় যাত্রা করে হরিশ্চন্দ্রপুর ২ নং ব্লকের ভালুকা ইরিগেশন বাংলোতে দুপুরে বিশ্রাম করার কথা রাহুলের। কিন্তু সেই আবাসনের অনুমতি পাওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, অনুমতি দিতে তালবাহানা করছে রাজ্য সরকার। সে ক্ষেত্রে বিকল্প ব্যবস্থা রাখছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। রাহুলকে স্বাগত জানাতে জেলা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে থাকছে বিশেষ উপহার। উপহারের তালিকায় থাকছে মালদার আমসত্ত্ব, রসকদম্ব, সুজাপুরের খাদির কাপড়, শাল এবং গনিখানের ছবি। জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি ইশা খান চৌধুরী বলেন, “তৃণমূলের এই অসহযোগিতা এবং আচরণ দুর্ভাগ্যজনক। জোটের বিষয়টা হাই কমান্ডের, তা নিয়ে মন্তব্য করব না। তবে রাহুল গান্ধির কর্মসূচি সফল হবে সেই নিয়ে সন্দেহ নেই।”
প্রাক্তন বিধায়ক মোত্তাকেন আলমের বক্তব্য, “তৃণমূল কোন কিছু করে রাহুলের কর্মসূচিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারবে না। দেশজুড়ে বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধি লড়ছে।” জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, “জোটের বিষয়টা তো উচ্চ নেতৃত্ব দেখছে। কিন্তু এই জেলায় কংগ্রেস ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধা করে দিচ্ছে। বিজেপির বি টিম হয়ে কাজ করছে।”
জেলা তৃণমূল মুখপাত্র আশীষ কুন্ডুর মতে, “রাহুল তো বেশিরভাগ সময় দেশের বাইরে থাকেন। তিন রাজ্যের বিধানসভায় কংগ্রেসের ভরাডুবি হল। বাংলায় রাহুলের এসে কোন লাভ নেই। এই রাজ্যে বিজেপির বিরুদ্ধে একাই লড়তে পারবেন মমতা ব্যানার্জি। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব যেভাবে বারবার তৃণমূলকে আক্রমণ করছে তা মেনে নেওয়া যায় না।”