নিউজ ব্যুরোঃ তিনরাত্রি ফালাকাটায় (Falakata) থাকবে রাহুল গান্ধির (Rahul Gandhi) ন্যায় যাত্রার শিবির। তবে রাহুল নিজে তিনরাত্রি শহরে থাকবেন কি না তা অবশ্য এখনও স্পষ্ট নয়। শনিবার রাতে দফায় দফায় বৈঠকের পর যে কর্মসূচি ঠিক হয়েছে তাতে ২৫ জানুয়ারি রাতেই ফালাকাটায় ঢুকবেন রাহুল। ২৮ তারিখ সকালে ফালাকাটা থেকে যাত্রা শুরু করবেন তিনি। তবে মাঝের দু’দিন, ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি, তিনি কোথায় থাকবেন, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ন্যায় যাত্রার কর্মসূচিতে ২৬ ও ২৭ জানুয়ারি ‘ব্রেক ডে’ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
কংগ্রেসের একটি সূত্র বলছে, ২৬ জানুয়ারি হাসিমারা (Hasimara) থেকে দিল্লি উড়ে যাবেন রাহুল। ২৭-এ ফিরে এসে ২৮ তারিখ সকালে ফের যাত্রায় যোগ দেবেন। যদিও দলের তরফে এখনও ওই বিষয়ে কোনও স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়নি। ফলে ব্রেক ডে নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা।
২৪ জানুয়ারি রাতে অসমের গৌরীপুরে থাকবেন রাহুল। ২৫ জানুয়ারি সকালে গৌরীপুরের ব্যাপারীপট্টি থেকে বাসে যাত্রা শুরু করবেন তিনি। ধুবড়ি জেলার অসম-বাংলা সীমান্তের ছাগলিয়া থেকে পদযাত্রা করে কোচবিহারের বক্সিরহাটে ঢুকে এরাজ্যের নেতাদের কাছে ন্যায় যাত্রার পতাকা তুলে দেবেন রাহুল। সেখান থেকে যাত্রাবাসে চেপে তুফানগঞ্জের বসাকপাড়ায় এসে বিশ্রাম নেবেন। তারপর সোজা যাত্রা পৌঁছাবে কোচবিহার শহরের মা ভবানী চৌপথিতে। সেখান থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার হেঁটে রাহুল যাবেন খাগড়াবাড়ি চৌপথিতে। তারপর যাত্রাবাসে পৌঁছাবেন ঘোকসাডাঙ্গা মোড়ের উনিশবিশায়। সেখানে বিশ্রাম নিয়ে সোজা ঢুকবেন ফালাকাটা টাউন ক্লাবের মাঠের তাঁবুতে।
২৮ তারিখ সকাল ৮টায় ফালাকাটা থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে যাত্রা শুরু করবেন রাহুল। সেখান থেকে বীরপাড়া, চালসা, লাটাগুড়ি হয়ে ময়নাগুড়ি শহরের মধ্য দিয়ে জলপাইগুড়ি শহরে ঢুকবেন তিনি। রুট চূড়ান্ত হলেও এখন পর্যন্ত ফালাকাটা শহর বা চা বলয়ের কোথাও রাহুলের পদযাত্রা বা জনসংযোগের কোনও কর্মসূচি চূড়ান্ত হয়নি। কংগ্রেস সূত্রের খবর, ফালাকাটা, বীরপাড়া, বানারহাট, চালসা সহ চা বলয়ের আটটি জায়গায় অল্প সময়ের জন্য হলেও রাহুল পদযাত্রা করুন, এমনটাই দাবি করেছেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতারা। তবে নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন বিষয় মাথায় রেখে ওই রুটে দুটি জায়গার বেশি রাস্তায় রাহুলকে নামাতে নারাজ ন্যায় যাত্রার দায়িত্বে থাকা দিল্লির কংগ্রেস নেতারা। আলিপুরদুয়ার জেলা কংগ্রেস সভাপতি মণিকুমার দার্নালের কথা, ‘সবাই চায় রাহুল গান্ধি তাদের এলাকায় যান। সবার চাহিদা তো মেটানো সম্ভব নয়। যাতে বেশি এলাকায় পৌঁছাতে পারেন, আমরা সেই চেষ্টা করছি।’
সূচি অনুসারে, ওইদিন দুপুরে জলপাইগুড়ি শহরের পিডব্লিউডি মোড় থেকে কদমতলা চৌপথি পর্যন্ত পদযাত্রা করবেন রাহুল। তারপর আনন্দ চন্দ্র কলেজ লাগোয়া এবিপিসি গ্রাউন্ডে বিশ্রাম নেবেন। সেখান থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে তিনি পৌঁছাবেন শিলিগুড়িতে। শিলিগুড়ি থানা মোড় থেকে এয়ারভিড মোড় পর্যন্ত পদযাত্রা ও জনসংযোগ করবেন। শিলিগুড়ি থেকে যাত্রাবাসে বাগডোগরার বিহার মোড়ে গিয়ে বিশ্রাম নেবেন রাহুল। রাতে তিনি থাকবেন সোনাপুরে। ২৯ জানুয়ারি সকালে ন্যায় যাত্রা শুরু হবে চোপড়া থেকে। ওইদিনই যাত্রা ঢুকবে বিহারের কিশনগঞ্জে।
উত্তরবঙ্গে বাড়তি দু’দিন ন্যায় যাত্রা থাকায় স্বাভাবিকভাবেই দায়িত্ব বেড়েছে স্থানীয় নেতাদের। সেইমতো পদক্ষেপও শুরু করছেন তাঁরা। বাড়তি ব্যবস্থাপনার কাজও শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন দার্জিলিং জেলা কংগ্রেস সভাপতি শংকর মালাকার। কংগ্রেসের পশ্চিমবঙ্গের পরিদর্শক গোলাম মীরের কথায়, ‘ন্যায় যাত্রার বাড়তি দু’দিন কীভাবে সংগঠনের কাজে লাগানো যায় সেবিষয়ে আমরা আলোচনা করছি।’ তবে ব্রেক ডে-তে রাহুল কোথায় থাকবেন তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি।