শিবশংকর সূত্রধর, কোচবিহার: কোতোয়ালি থানার পুলিশের অধীনে থাকা ২০১৩ সালের একটি মাদক মামলার কেস ডায়ারি উধাও হয়ে গিয়েছে। এই ঘটনায় কোচবিহারে (Coochbehar) পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করল সিবিআই (CBI)। নিছকই উধাও, নাকি কাউকে আড়াল করতে সেই ডায়ারি সরিয়ে ফেলা হয়েছে? এই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে।
ডায়ারি উধাওয়ের তদন্তে কলকাতা হাইকোর্টের জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চের তরফে সিবিআইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় সিবিআই থানায় সিবিআইয়ের তরফে একটি এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ যথেষ্ট চাপে রয়েছে। সিবিআই শীঘ্রই কোচবিহারে এসে তদন্তকারী পুলিশ আধিকারিকদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তবে কোচবিহার জেলা পুলিশ এবিষয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে। পুলিশ সুপার দ্যুতিমান ভট্টাচার্য ফোন না তোলায় তাঁর বক্তব্য মেলেনি।
২০১৩ সালের ১৬ মে কোতোয়ালি থানায় একটি মাদক সম্পর্কিত মামলা দায়ের হয়। যেখানে অভিযুক্ত ছিল শিলিগুড়ির দুই ব্যবসায়ী রমেশ আগরওয়াল ও পবন আগরওয়াল। পরবর্তীতে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলেও তারা আত্মসমর্পণ করেনি বা পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেনি। ২০২৩ সালের নভেম্বরে তারা আত্মসমর্পণ করতে গেলে কেস ডায়ারি উধাও হওয়ার ঘটনাটি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। আদালতে কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানায়, সেই মামলার কেস ডায়ারি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ২০১৬ সাল পর্যন্ত তার অস্তিত্ব থাকলেও তার পরবর্তী সময়ে সেটি কোথায় রয়েছে কেউ জানে না।
মাদকের মতো গুরুত্বপূর্ণ মামলার কেস ডায়ারি উধাও হয়ে যাওয়ায় পুলিশ আধিকারিক ও কর্মীদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। কাউকে আড়াল করতে সেই ডায়ারি সরিয়ে ফেলা হয়েছে কি না, তা নিয়েও চর্চা হচ্ছে। এরই মাঝে ২৪ নভেম্বর মাদক মামলায় অভিযুক্ত রমেশ ও পবন আত্মসমর্পণ করে। বর্তমানে তারা জেল হেপাজতে রয়েছে। গত ১৫ ডিসেম্বর জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ সেই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইকে দেয়। একটি মামলা করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেইমতো বুধবার সিবিআইয়ের তরফে সেই মাদক মামলার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা।
কোতোয়ালি থানার এক সূত্র জানিয়েছে, সিবিআই তাদের মতো করে তদন্ত শুরু করেছে। সেইসঙ্গে পুলিশের তরফেও মাদক মামলার সেই কেস ডায়ারিটি খোঁজা হচ্ছে।