মিঠুন ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: অনুদান নয়, পরিকাঠামো উন্নয়নে নজর রামকৃষ্ণ মিশনের। তাই রাজ্য সরকারের দেওয়া দুর্গাপুজোর অনুদান নিচ্ছে না মিশন। নিজ খরচেই এবার পুজোর আয়োজন হচ্ছে মিশন পরিচালিত সাহুডাঙ্গি আশ্রমে।
গত বছরের ২৭ নভেম্বর এই আশ্রটিকে রামকৃষ্ণ মিশন অধিগ্রহণ করে। ফলে এবারই প্রথম মিশনের তরফে দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই আশ্রমে। মিশনের বক্তব্য, আশ্রমের পরিকাঠামো উন্নয়নে যদি রাজ্য সরকার অর্থ বরাদ্দ করে, তবে তা সাদরে গ্রহণ করা হবে। মিশনের পক্ষে স্বামী নরেশানন্দ মহারাজের বক্তব্য, মিশনের বহু ভক্ত ও শুভচিন্তক রয়েছেন। এখানকার খরচের হিসেবে তাঁদের দেওয়া অর্থে মায়ের পুজো হয়ে যাওয়ার কথা। সেই কারণেই সরকারি অনুদানের টাকা পুজোয় ব্যবহার করতে চান না তাঁরা। বরং সরকারিভাবে এখানকার কিছু পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করে দেওয়া হলে ভালো হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
ক্লাব ও সংস্থাগুলির পাশাপাশি আশ্রমের পুজোতেও আর্থিক অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। তবে পুজোর জন্য ৭০ হাজার টাকা পেতে গেলে কিছু নিয়ম-নীতি পালন করতে হয়। যা মিশনের পক্ষে সবটা মেনে চলা সম্ভব নয়। সেই কারণে মিশন চায় এই অনুদানের অর্থে রাজ্য সরকার সমাজের উন্নয়নমূলক কাজ করুক। বর্তমানে মিশনের দক্ষিণ সীমান্তে সাহুডাঙ্গি হাট পি কে রায় হাইস্কুলের বিপরীতে প্রায় ১৫০-২০০ মিটার দেওয়াল ভেঙে পড়েছে। ফলে আশ্রমের নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটেছে। এছাড়াও মিশনের ভেতরের একটি রাস্তার মেরামতির প্রযোজন রয়েছে।
এই প্রসঙ্গে শিলিগুড়ির বাসিন্দা ও আশ্রম অনুরাগী সুজিত বসাক বলেন, ‘আশ্রমের ভেতরের একটি রাস্তা এর আগেও শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ করে দিয়েছিল। পুনরায় রাস্তাটির সংস্কারের প্রয়োজন হওয়ায় কর্তৃপক্ষের কাছে সংস্কারের আবেদন করা হয়েছে।’ এই প্রসঙ্গে কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘আমি নিজে বিষয়টি দেখে এসেছি। ওপরমহলে আবেদন পাঠানো হয়েছে। এখনও অনুমোদন পাওয়া যায়নি।’
বহু বছর আগে থেকে এই আশ্রমে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। সেই পরম্পরা বজায় রেখে মিশন এবারও পুজোর আয়োজন করেছে। যা নিয়ে স্থানীয় এলাকায় পুজোর দিনগুলিতে বাড়তি উন্মাদনা থাকে। আশ্রমে আসেন বহু মানুষ। বর্তমানে মিশন পরিচালিত একটি শিক্ষাকেন্দ্রের শিক্ষক ও বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধান শশিকান্ত বর্মন বলেন, ‘খুব কম বয়স থেকে এই আশ্রমের সঙ্গে জড়িয়ে আছি। বর্তমানে সব কিছুর দায়িত্বে রয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন, তাতে মানুষের উৎসাহ কমবে না বলেই মনে করছি।’