উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতিতে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এল ইডির তদন্তে। জানা গিয়েছে, রীতিমতো ‘রেট চার্ট’ তৈরি করে পুরসভায় চলত চাকরি বিক্রির কারবার। সুইপার, পিয়ন, অ্যাম্বুল্যান্স অ্যাটেন্ডেন্ট, ড্রাইভার, রাজমিস্ত্রি, স্যানিটারি অ্যাসিস্ট্যান্ট, ডাম্পার অপারেটর পদের জন্য ৪ লক্ষ টাকা ঘুষের দর ধার্য ছিল। একইভাবে পুরসভার স্কুলে শিক্ষক, পাইপলাইন ইনস্পেক্টর, অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্যাশিয়ার পদের জন্য ৫ লক্ষ টাকা ও সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার পদে চাকরির জন্য ৬ লক্ষ টাকা ঘুষ দিতে হত। গ্রুপ ‘ডি’ ও গ্রুপ ‘সি’ তে বিভিন্ন পদে চাকরির এমনটাই ‘রেট চার্ট’ তৈরি ছিল বলে অভিযোগ।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে অয়ন শীলের বাড়িতে অভিযান চালানোর সময় কাকতালীয়ভাবে পুরসভায় দুর্নীতির অভিযোগ সামনে আসে। এই অভিযান চালানোর সময় তদন্তকারীদের হাতে বেশ কিছু নথিপত্র চলে আসায় ‘ক্যাশ ফর জব’ চক্রের বিষয়টি প্রকাশ হয়ে যায়।
ইডির দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্যজুড়ে ৬০টি পুরসভায় ১৭টি বিভিন্ন পদে ৬০০০ শূন্যপদে ২০১৪-১৫ সাল থেকে যাঁরা টাকা দিয়েছেন তাঁদেরই নিয়োগ করা হয়েছে। এরমধ্যে কাঁচরাপাড়া, নিউ ব্যারাকপুর, কামারহাটি, টিটাগর, বরানগর, হালিশহর, দক্ষিণ দমদম, উত্তর দমদমের মতো পুরসভা রয়েছে। যাঁরা টাকা সংগ্রহ করেছেন এবং যাঁরা টাকা দিয়েছেন তাঁদের নামের তালিকা ইতিমধ্যেই ইডির হাতে এসেছে।
এক ইডি আধিকারিক জানিয়েছেন, পুরসভার চেয়ারম্যানরা ও বেশ কিছু সরকারি আধিকারিক এই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন। এখনও তদন্ত প্রক্রিয়া পুরোদমে চলছে। এপ্রিল মাসে ইডি কলকাতা হাইকোর্টে জানায় পুরসভায় নিয়োগ দুর্নীতির অঙ্কের পরিমান ২০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে। অয়ন শীলকে জেরা করে অন্তত এই ইঙ্গিত মিলেছে। ২২ এপ্রিল সিবিআইয়ের তরফে অয়ন শীল ও অজানা বেশ কিছু ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের করা এফআইআর-এ এই তথ্যের উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও তৃণমূল সূত্রের দাবি, অভিযান ও তদন্ত পুরোটাই বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জের।