জলপাইগুড়ি ব্যুরো: প্রয়োজন ৪৫০ জনেরও বেশি। সেই জায়গায় জলপাইগুড়ি জেলায় মাত্র ১৩৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে নিয়োগ করা হচ্ছে। আরও অবাক করার বিষয় বলতে, যে স্কুলে পর্যাপ্ত শিক্ষক রয়েছে সেখানে আরও বেশি শিক্ষক দেওয়া হয়েছে। আবার যেখানে সেভাবে শিক্ষক নেই, সমস্যা মেটাতে সেখানে কোনও চেষ্টাই করা হয়নি। এনিয়ে জেলার শিক্ষা মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান লক্ষমোহন রায় বলেন, ‘৪৫০–রও বেশি শূন্যপদের তালিকা পাঠানো হয়েছিল। মাত্র ১৩৯ জনের অনুমোদন এসেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম। আশা করছি, আরও শিক্ষক পাঠালে সমস্যা মিটবে।’
স্কুলগুলিতে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে অসামঞ্জস্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে লক্ষমোহন বলেন, ‘যে স্কুলগুলি ভালোমতো চলছে সেগুলিকে ভালোভাবে রাখার চেষ্টা হচ্ছে। কিছু স্কুলে শিক্ষক থাকলেও পড়ুয়া নেই। সেই স্কুলগুলিতে শিক্ষক পাঠিয়েও সমস্যা মেটানো যাবে না। তবে এই সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, অন্য কিছু স্কুল নিয়ে দপ্তরের কিছু ভাবনাচিন্তা রয়েছে।’
ভান্ডানি বিএফপি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক কমলেশ রায় বললেন, ‘আমাদের স্কুলে ৫১ জন পড়ুয়া রয়েছে। মাত্র দুজন শিক্ষক রয়েছেন। এই দু’জনকে দিয়ে পঠনপাঠন চালাতে খুবই সমস্যা হয়। পর্যাপ্ত শিক্ষক দিলে পঠনপাঠনে আমাদের অনেকটাই সুবিধা হবে।’ পশ্চিম ডাউকিমারি নিউ প্রাইমারি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক বিশ্ব দেবনাথ বললেন, ‘আমাদের স্কুলে ৪৬ জন পড়ুয়ার জন্য মাত্র দুজন শিক্ষক রয়েছেন।’ ডাউকিমারি বিএফপি স্কুলের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অশোক দাস বললেন, ‘আমাদের স্কুলে ৫৬ জন পড়ুয়া রয়েছে। পর্যাপ্ত শিক্ষক দিলে স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা বাড়বে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’
জলপাইগুড়ি দেশবন্ধুনগর আরআর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আবার উলটো ছবি। এখানে ১৯ জন পড়ুয়া ও তিনজন শিক্ষক রয়েছেন। শিক্ষক–পড়ুয়ার অনুপাত এখানে অবাক করার মতোই। স্কুল কর্তৃপক্ষও বিষয়টি স্বীকার করে নিয়েছে। মালবাজারের তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতের তেশিমলা বিএফপি স্কুলে ১৯১ জন পড়ুয়ার জন্য পাঁচজন স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন। কুমলাই গ্রাম পঞ্চায়েতের দারোগাবস্তি বিএফপি স্কুলেও পাঁচজন স্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন। এখানে ২৫৩ জন পড়ুয়া রয়েছে। দ্রুত সমস্যা মেটানোর দাবি জোরালো হয়েছে।