নাগরাকাটা: অবশেষে জট খুলল রিয়াবাড়ি চা বাগানের (Riabari Tea Garden)। বৃহস্পতিবার থেকে খুলে যাচ্ছে বানারহাটের ওই বাগানটি। বুধবার উত্তরবঙ্গের অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার কল্লোল বন্দ্যোপাধ্যায়ের পৌরহিত্যে শিলিগুড়ির দাগাপুরের শ্রমিক ভবনে রিয়াবাড়ি নিয়ে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়। ঠিক হয়েছে বাগাটিতে সকাল ৭টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত একটানা কাজ হবে। মাঝে দুপুর ১২টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শ্রমিকদের বিশ্রামের বিরতি থাকবে। রিয়াবাড়ি খুলে গেলেও একই ব্যবস্থাপনার আওতাধীন নাগরাকাটার বামনডাঙ্গা-টন্ডু ও মেটেলির সামসিং এর সমস্যা কিন্তু এখনও ঝুলেই রইল। শ্রমিক ভবনেই ওই দুই বাগানের নয়া কর্ণধারকে নিয়ে শ্রম দপ্তরের বৈঠকে এদিন কোনও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি।
জলপাইগুড়ির ডেপুটি লেবার কমিশনার শুভাগত গুপ্ত বলেন, অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে রিয়াবাড়ির বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। বামনডাঙ্গা-টন্ডু ও সামসিং কর্তৃপক্ষ আরও কয়েকদিন সময় চেয়েছেন। ওই দুই বাগান চালানোর জন্য যে কোম্পানির সঙ্গে শ্রমিকদের দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল তার মালিক ঋত্ত্বিক ভট্টাচার্য বলেন, চুক্তি মোতাবেক শ্রমিকদের পুরোনো বকেয়া মেটাতে সরকারি অনুমোদন চাওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে।
৮ ঘণ্টা কাজের ইস্যুকে কেন্দ্র করে শ্রমিক-মালিক অসন্তোষের জেরে রিয়াবাড়িতে কর্মবিরতির বিজ্ঞপ্তি জারি হয় গত ১ ডিসেম্বর। এরপর শ্রম দপ্তরের তরফে প্রথমে গত ৮ ডিসেম্বর একটি ম্যারাথন ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হলেও সেখানে কোনও সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসেনি। এদিন যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে সেই মোতাবেক বৃহস্পতিবার থেকে বাগান খোলার পর ৭টা থেকে ৩টা পর্যন্ত কাজের পাশাপাশি কোনও উৎসবের ছুটির আগের দিন আধা বেলা কাজের যে প্রথা চালু ছিল তা আর থাকবে না। ফ্যাক্টরির কাজ রবিবার চালু থাকলে। সেখানকার শ্রমিকদের সোমবার সাপ্তাহিক ছুটি দেওয়া হবে। বাগান কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের পানীয় জলের সমস্যার সমাধানে সমস্ত রকম পদক্ষেপ করবে। চলতি বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে নিজেদের সাধ্যমত জ্বালানি কাঠ সরবরাহ, শ্রমিক কল্যাণমূলক কাজকর্ম ও শ্রমিক আবাস মেরামতির কথাও উল্লেখ রয়েছে চুক্তিপত্রে।
এদিনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে সমস্ত শ্রমিক সংগঠনই। তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি তোবারক আলি বলেন, শ্রম দপ্তরের দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর রিয়াবাড়ি ফের খুলছে। প্রত্যেকেই সন্তুষ্ট।