কুমারগ্রাম: রাস্তা নিয়ে রাজনীতির জেরে নির্মাণকাজ থমকে যাওয়ার আশঙ্কায় ভুগছেন কুমারগ্রাম ব্লকের জয়দেবপুর মৌজার শতাধিক বাসিন্দা। সরকারি উদ্যোগে স্থানীয় অনিল মিঞ্জের বাড়ি থেকে জয়দেবপুর ফেরিঘাট পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সিসি রোড নির্মাণ সম্প্রতি শুরু হয়েছে। নিম্নমানের সামগ্রীতে রাস্তাটি নির্মিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। বৃহস্পতিবার এই মর্মে বিডিওর দ্বারস্থ হলেন কুমারগ্রাম পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা বিজেপির নলিত দাস। বিষয়টি তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা পরিষদে পাঠানো হবে বলে বিডিও জানিয়েছেন। যদিও ওই পঞ্চায়েতের সিপিএম সদস্য বিজেপি নেতার এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়েছেন।
বিরোধী দলনেতা এদিন বিডিওকে লিখিত অভিযোগে জানান, পলি মেশানো বালি, নকল সিমেন্ট, রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে রায়ডাক নদী থেকে তোলা বালি-পাথর দিয়ে প্ল্যান-এস্টিমেট বহির্ভূতভাবে খেয়ালখুশিতে ঠিকাদারের লোকেরা কাজ করছে। ঠিকমতো রোলার, পর্যাপ্ত জল দেওয়া হচ্ছে না। এমন দায়সারাভাবে তৈরি পাকা রাস্তা এক বছরও টিকবে না। ঘটনার সরেজমিনে তদন্ত ও দ্রুত শিডিউল মেনে পুনর্নির্মাণের দাবি জানান তিনি।
কুমারগ্রামের বিডিও গৌতম বর্মন জানান, তিনি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপের জন্য সেটি জেলা পরিষদে পাঠানো হবে। রাস্তা নিয়ে রাজনীতি হচ্ছে বলে কটাক্ষ করে তৃণমূলের কুমারগ্রামের অঞ্চল চেয়ারম্যান কাঞ্চন সরকার জানান, বিজেপির বিধায়ক, সাংসদ থেকে শুরু করে পঞ্চায়েত সদস্যরা কোনও উন্নয়নের কাজ করছেন না। যেখানে কাজ হচ্ছে সেখানে বিরোধিতা করে নোংরা রাজনীতি করছে।
তথ্য বলছে, ট্রাইবাল ডিপার্টমেন্টের স্টেট ওয়েলফেয়ার ফান্ডের ২৮ লক্ষ ৪৬ হাজার ২৩০ এবং ৩১ লক্ষ ৮০ হাজার ৩৩৪ টাকায় জয়দেবপুরে ১০/৬১ অংশে দুটি পাকা রাস্তা তৈরি হচ্ছে। ১০/৬১ অংশের সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য কুঞ্জবিহারী দাস অবশ্য বলেন, ‘প্রায় দেড় দশক পর জয়দেবপুরে পাকা রাস্তার কাজ করা হচ্ছে। গ্রামে এই কাজ নিয়ে আসার জন্য অনেক লড়াই করতে হয়েছে। কাজের মান ও পদ্ধতি নিয়ে আমাদের তেমন কোনও অভিযোগ নেই। যতটুকু যা দেখছি, তাতে ঠিকঠাকভাবেই কাজ হচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে।’ স্থানীয় বাসিন্দা খগেন দাস জানান, দীর্ঘদিন পর গ্রামে উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে। এতে সবাই খুশি। ঠিকঠাকভাবে কাজ হচ্ছে কি না সেটা অবশ্যই দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার ও প্রশাসনের কর্তাদের খতিয়ে দেখা উচিত। টেকসই রাস্তা নির্মাণে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নজরদারি জরুরি। অভিযোগ, পালটা অভিযোগ কিংবা রাজনীতির জাঁতাকলে গ্রামের উন্নয়ন থমকে যাক এটা কখনোই কাম্য নয়।