করণদিঘিঃ কাকার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় নাম জড়িয়েছে ভাইপোর। ঘটনায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে অভিযুক্ত ভাইপোকে। গ্রেপ্তার হয় ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত আরও তিন দুষ্কৃতী। বর্তমানে অভিযুক্ত ভাইপো জামিনে মুক্ত। জামিন পাওয়ার পরই দুই কাকাকে শায়েস্তা করতে হাত মেলায় গ্রামের মাতব্বরদের সঙ্গে। গ্রামেই ডাকা হয় সালিশি সভা। সেই সভায় যেতে অস্বীকার করায় কাকাকে গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়তে না যাওয়ার ফতোয়া জারি করেছে অভিযুক্ত ভাইপো ও গ্রামের মতব্বরেরা। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে গ্রামে।
ঘটনাটি ডালখোলা থানার সূর্যাপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহাসরা গ্রামে। শুক্রবার দুপুরে গ্রামের মসজিদে নমাজ পড়তে গিয়েছিলেন মহম্মদ ইব্রাহিম। তখন গ্রামের বাসিন্দা মহম্মদ জাহাঙ্গীর আলম, মহম্মদ সাগির, মহম্মদ মহরমরা মসজিদে নমাজ পড়তে নিষেধ করেন। কেন এই নিষেধাজ্ঞা?
ঘটনার বিবরনে জানা গিয়েছে, গত ১০ জানুয়ারি মহম্মদ ইব্রহিম ও তাঁর দাদা মহম্মদ রফিকের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। দুই বাড়ি থেকে সর্বস্ব লুট করে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ডালখোলা থানার পুলিশ। পুলিশ ঐ রাতেই নিচিতপুর থেকে তিন ডাকাতকে পাকরাও করে। ধৃতদের মধ্যে একজন ইব্রাহিমেরই ভাইপো আলি হোসেন। বর্তমানে আলি হোসেন জামিনে মুক্ত।
এদিকে ডাকাতির ঘটনায় অভিযুক্ত আলি হোসেন জামিন পেতেই দুই কাকা অর্থাৎ মহম্মদ ইব্রহিম ও তাঁর দাদা মহম্মদ রফিককে শায়েস্তা করতে হাত মেলায় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সহ গ্রামের মাতব্বরদের সঙ্গে। কেন আলির নাম ডাকাতিতে জড়িয়েছে, সেই কারণে গ্রামে সালিশি সভা ডাকে স্থানীয় আলি ঘনিষ্ঠ শেখ জাহাঙ্গীর আলম। সভায় ডেকে পাঠানো হয় অভিযুক্ত আলি হোসেনের কাকা ইব্রাহিম ও রফিককে। গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ধানী বালা মুর্মু ইব্রাহিমের বাড়িতে গিয়ে গ্রাম্য সালিশির কথা জানিয়ে আসে। পঞ্চায়েত সদস্যকে ইব্রাহিম জানিয়ে দেয়, সালিশি সভা থানায় বসলেই সে উপস্থিত থাকবে, অন্যা কারোর বাড়িতে তাঁরা যাবেন না। এরপর থেকেই সালিশি সভায় বসার জন্য অনবরত চাপ সৃষ্টি করতে থাকে গ্রামের মাতব্বররা। মাতব্বরদের চাপ সহ্য করতে না পেরে লিখিতভাবে ডালখোলা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ইব্রাহিম।
এদিকে, সালিশি সভায় না আসায় গ্রামের মসজিদে নামাজ পড়তে ইব্রাহিমকে নিষেধ করেন শেখ জাহাঙ্গীর। শুক্রবার দুপুরে গ্রামের মসজিদে নমাজ পড়তে গেলে তাকে নমাজ পড়তে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। ইব্রাহিম জানান, ‘আমার বাড়ির ডাকাতির ঘটনায় কে বা কারা যুক্ত ছিল তা আমার জানা নেই। পুলিশ তদন্ত করে ডাকাতদের গ্রেপ্তার করেছে। আমার ভাইপো আলি হোসেন যে এই ডাকাতির ঘটনায় যুক্ত ছিল, পরে সেটা জানতে পারি। জেল খেটে আসার পর থেকেই ভাইপো আলি আমার নামে মিথ্যে অভিযোগ তুলে জরিমানা আদায় করার জন্যই গ্রাম্য সালিশি সভায় উপস্থিত থাকার জন্য বারংবার চাপ দিচ্ছে। গ্রাম্য সালিশি সভায় না বসার কারণে গ্রামের মসজিদে নমাজ পড়তে মানা করে গ্রামের বাসিন্দা শেখ জাহাঙ্গীর সহ সাগীর ও মোহারম। আলি হোসেন ডাকাত নয় একথা গ্রামের যারা বলছেন, তাদের উদ্দেশ্যে ইব্রাহিম প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন আলি হোসেন যখন পুলিশের হেপাজতে ছিলেন তখন কেন গ্রামবাসীরা থানায় গিয়ে পুলিশকে জানালো না?