উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ টানা তিনদিন লুকোচুরি খেলার পর অবশেষে জঙ্গলে ফিরল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার। বনকর্মীদের তাড়া খেয়ে এদিন সকাল ৯টা নাগাদ নদী সাঁতরে বাঘটি ফিরে যায় সুন্দরবনের জঙ্গলে। ফলে স্বস্তি মিলল সুন্দরবন লাগোয়া মৈপীঠ গ্রামের বাসিন্দাদের।
শীত পড়তেই লোকালয়ে উপদ্রব বেড়েছে বাঘের। বাঘের আতঙ্কে ঘুম উড়েছে গ্রামবাসীদের। এলাকায় দেখা মিলছে বাঘের পায়ের ছাপ। সন্ধ্যার পর থেকে ভয়ে আর ঘরের বাইরে বেরোচ্ছেন না স্থানীয়রা। এমনই পরিস্থতি তৈরি হয়েছিল সুন্দরবনের কুলতলি ব্লকের অন্তর্গত মৈপীঠ উপকূল থানার গুড়গুড়িয়া- ভুবনেশ্বরী গ্রাম পঞ্চায়েতের গৌড়ের চক গ্রামে। এ গ্রামে গত শুক্রবার বাঘের উপস্থিতি টের পায় গ্রামবাসীরা। শনিবার গ্রামের একাধিক জায়গায় দেখা মেলে বাঘের পায়ের ছাপ। এদিনই বাঘ ধরতে এলাকায় খাঁচা বসায় বনদপ্তর। খাঁচার পাশাপাশি ঘুমপাড়ানি বন্দুকও তৈরি রাখা হয়েছে। রবিবারও দিনভর আতঙ্ক তাড়া করে গ্রামবাসীদের। রবিবার সন্ধ্যার পরে বাঘের গর্জন টের পায় বনকর্মীরা। অনুমান করা হয়েছিল তাঁদের পাতা ফাঁদে পা দেবে দক্ষিণরায়। কিন্তু সেই ফাঁদে পা দেয়নি বাঘ। জাল দিয়ে গ্রামের দিকে ঘিরে ফেলাও হয়। যাতে কোনও ভাবে বাঘটি রাতের অন্ধকারে গ্রামে ঢুকে না পড়তে পারে। মৈপীঠ উপকূল থানার পুলিশের পক্ষ থেকেও লাগাতার গ্রামবাসীদেরকে সতর্ক করতে মাইকিং করা হয়েছে। অবশেষে সোমবার ভোরে গ্রামের বাঘের দেখা পায় বনকর্মীরা। এরপরই বাঘ ধরতে তৎপরতা শুরু করে বনকর্মীরা।
এদিন বাঘের দেখা মিলতেই মৈপিঠ উপকূলবর্তী এলাকায় বাড়ানো হয় বনকর্মীদের সংখ্যা। বনকর্মীদের দেখে বাঘটিকে তাড়া করতেও দেখা যায়। প্রাণ বাঁচাতে গাছে উঠে পড়েন দুই কর্মী। বাঘ তাড়াতে ফাটানো হয় বাজি পটকা। অবশেষে বেগতিক দেখে, বনকর্মীদের তাড়া খেয়ে বাঘটি মাকরি নদীতে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে ফিরে যায় নিজের আস্থানা আজমলমাড়ির জঙ্গলে। এরপরই বাঘের আতঙ্ক থেকে স্বস্তি মেলে মৈপিঠ উপকূল এলাকার গ্রামের বাসিন্দাদের।