প্রসেনজিৎ দাশগুপ্ত, নয়াদিল্লি: পঞ্চায়েত ভোটের পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তীব্র ভর্ৎসনা করল তপসিলি জাতি ও উপজাতি বিষয়ক জাতীয় কমিশন। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসসি-এসটি কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অরুণ হালদার বলেন, ‘নির্বাচনি আবহে সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে বিভিন্ন জেলায়। এদিনও উত্তপ্ত ভাঙড়। অন্যদিকে, উত্তেজনা ছড়িয়েছে উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায়। যার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, যাদের বেশির ভাগই তপসিলি জাতি উপজাতিভুক্ত। এই সন্ত্রাসের আবহ মেনে নেওয়া যায় না।’
অরুণ হালদারের দাবি, নির্বাচনি সন্ত্রাসে ইচ্ছাকৃতভাবে তপসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষকে টার্গেট করা হচ্ছে। কারণ, রাজ্যে ২২ শতাংশ মানুষ তপশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত। এই মর্মে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহাকে নোটিশ জারি করছে এসসি-এসটি কমিশন। অরুণ হালদার বলেন, রাজীব সিনহা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের পদে দায়িত্ব নেওয়ারের পরদিনই পঞ্চায়েতের দিনক্ষণ ঘোষণা করেন। সে অর্থে রাজ্যে শান্তিপূর্ণ আবহে মনোনয়ন ও নির্বাচন করানো তাঁর দায়িত্ব। কিন্তু সে দায়িত্ব পালনে তিনি সম্পূর্ণ ব্যর্থ। রাজ্যের অধিকাংশ হিংসার ঘটনায় টার্গেট হচ্ছে তপসিলি জাতি উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষজন। তপসিলি সমাজের সুরক্ষা দিতে না পারলে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া হোক। কেন বারবার তপশিলি সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের ওপর আক্রমণ নেমে আসছে, সেটার জন্য জবাব তলব করে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য পুলিশের ডিজি ও মুখ্য সচিবকেও পাঠানো হচ্ছে নোটিশ, জানিয়েছেন অরুণ হালদার।
এদিন রাজ্য সরকারের প্রতি অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, ‘গত ২ বছরে রাজ্য সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য বারবার চিঠি দিয়েছি। কিন্তু সরকারের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি। এই রাজ্য ২২ শতাংশ তপশিলি সম্প্রদায়ের মানুষের ওপর জাতিগত নির্যাতন হচ্ছে। আমি নিজের উদ্যোগে জেলায় গেলে জেলাশাসক পুলিশ সুপাররা কয়েক মিনিট বৈঠকে থেকে পালিয়ে যান, অথবা দেখা করেন না। আগেই রাজ্যপালকে জানিয়েছি কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। এভাবে কাজ করা যায় না।’ কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যানের ব্যাখ্যা, অসাংবিধানিক বা অনৈতিক কোনও কিছুই আমরা মেনে নেব না। তপসিলি জাতি উপজাতি সম্প্রদায়ের ওপর আঘাত এলে চুপ করে বসে থাকবে না কমিশন।