অমিতকুমার রায়, হলদিবাড়ি: তিল চাষ (Sesame cultivation) করে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন হলদিবাড়ি (Haldibari) ব্লকের চাষিরা। গোটা কোচবিহার সহ হলদিবাড়ি ব্লকে ক্রমশ তিল চাষ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আর সেই তিল চাষ ঘিরে স্থানীয় কৃষকরা নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করেছেন। এ ব্যাপারে তাঁরা পাশে পেয়েছেন জেলা কৃষি দপ্তরকে। তিল চাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শের পাশাপাশি এবার বিনামূল্যে তিলের বীজও বিলি করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। প্রথাগত ধান, পাট, সর্ষে চাষের মতো তিল চাষে তেমন ঝামেলা নেই বললেই চলে। প্রয়োজন হয় না কীটনাশক কিংবা ঘনঘন সারও প্রয়োগের। স্বল্প পরিশ্রমের ফসল তিল। আশানুরূপ ফলন হলে বিঘা প্রতি পাঁচ থেকে ছ’মন তিল মেলা আশ্চর্যের নয়।
আর সেজন্যই জেলা কৃষি দপ্তরের পরামর্শে পতিত জমিতে তিল চাষ করে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ফলন ও দাম পেয়ে লাভবান হচ্ছেন ব্লকের চাষিদের একটি বৃহত্তর অংশ। স্থানীয় বাজার সহ গোটা দেশে তিলের চাহিদা ব্যাপক। এ দিয়ে ভোজ্য তেলের ঘাটতি ও বহুলাংশে চাহিদা মেটানো সম্ভব বলে মনে করে কৃষি দপ্তর। তাদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, চলতি বছর হলদিবাড়ি ব্লকের প্রায় প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই তিলের চাষ করা হয়েছে। উন্নত প্রজাতির তিল চাষে এই অঞ্চলের চাষিরা সফল। উন্নত প্রজাতির তিল গাছে তিন-চারটি প্রধান শাখা ও একাধিক উপশাখা থাকায় ফলন অনেক বেশি হয়।
নয়ারহাট গ্রামের তিলচাষি গৌতম রায় এ সম্পর্কে বলেন, ‘তিল অত্যন্ত লাভজনক ফসল। এবার তিন বিঘা জমিতে তিল চাষ করছি। ভালো ফলন হয়েছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই ফসল তোলা হবে। ভালো মুনাফার আশা করছি।’ দক্ষিণ বড় হলদিবাড়ির কানাই বিশ্বাস জানান, কৃষি দপ্তরের পরামর্শে এবার আলু তুলে জমিতে পাটের বদলে তিল লাগিয়েছি। এখনও অবধি তেমন সার বা কীটনাশকের দরকার হয়নি। তবে তীব্র তাপে যেখানে পাট গাছ শুকোতে বসেছে সেখানে তিলের বেশ ভালো ফলন হয়েছে।
জেলা কৃষি দপ্তরের এক কর্তার দাবি, তিলের তেলের অনেক পুষ্টিগুণ এবং ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। এই তেল ত্বক ও স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এবার তিলচাষিদের প্রয়োজনীয় পরামর্শের পাশাপাশি বিনামূল্যে তিল বীজ বিলি করা হয়েছে। তিল চাষে খরচ অনেক কম। আগাছা পরিষ্কার, জলসেচের প্রয়োজন হয় না। বাজারে তিলের চাহিদা থাকায় এখন চাষিরা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আশা করছি, আগামীতে ব্লকে তিলের চাষ আরও বাড়বে।