শিলিগুড়ি: গোটা বিশ্বে প্রযুক্তির ব্যবহার দিন-দিন বেড়েই চলেছে। ফলে স্কুল স্তরে প্রযুক্তি শিক্ষার অন্তর্ভুক্তিকরণ এখন সময়ের দাবি। আর এই প্রযুক্তির বাজারে সবচেয়ে এগিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই)। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মধ্যে এআইয়ের চাহিদা বাড়ছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
ইতিমধ্যেই শিক্ষা দপ্তরের কাছে এআই বিষয় পড়ানোর জন্য আবেদন জানাচ্ছে স্কুলগুলো। চলতি বছর একাদশে এআই পড়ানোর অনুমোদন পেয়েছে শিলিগুড়ি নেতাজি হাইস্কুল ও তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়। কিন্তু প্রথম বছরেই ভর্তির হার হতাশাজনক। এই বিষয়ের প্রতি তেমন আগ্রহ লক্ষ করা যাচ্ছে না সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের।
কর্মমুখী বিষয়ের প্রতি পড়ুয়াদের ঝোঁক বাড়াতেই এআই পড়ানোর অনুমোদন চেয়েছিল স্কুলগুলি। যার জন্য স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষককে শিক্ষা দপ্তরের তরফে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু একাদশে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হতেই দেখা যায় তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়ে এই বিষয়টি নিয়ে ভর্তি হয়েছে ছয়জন। অন্যদিকে, শিলিগুড়ি নেতাজি হাইস্কুলে এই বিষয়ে ভর্তির সংখ্যা মাত্র সাত।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পড়ানোর জন্য স্কুলগুলিতে উপযুক্ত পরিকাঠামো রয়েছে। তারপরেও কেন আগ্রহ নেই, তা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত বলেন, ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যাপারে বেশিরভাগ অভিভাবক জানেন না। এআই নিয়ে পড়াশোনা করে কী কী চাকরির সুযোগ রয়েছে, সেই সম্পর্কেও পড়ুয়াদের স্পষ্ট ধারণা নেই। জানাবোঝার অভাবেই এই বিষয়টি নিয়ে পড়াশোনা করার আগ্রহ কম বলে আমার মনে হয়।’ স্কুলগুলোতে অষ্টম শ্রেণি থেকে পড়ুয়াদের এআই নিয়ে সেমিনার করানোর পরামর্শ দেন তিনি।
পড়ুয়া ভর্তির সংখ্যা হতাশাজনক দেখে তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক নাথ বলেন, ‘আমরা দ্রুত এআই নিয়ে একটি কর্মশালার আয়োজন করব। যাতে পড়ুয়ারা বিষয়টি ভালো করে বোঝে। ভর্তির আগেও আমরা এই বিষয়ের উপর কর্মশালা করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম, কিন্তু সেটা বাস্তবায়িত হয়নি।’
অন্যদিকে শিলিগুড়ি নেতাজি হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক রাজীব ঘোষের বক্তব্য, ‘বিষয়টির গুরুত্ব বুঝেই শিক্ষা দপ্তরে আবেদন করা হয়েছিল। আশা করছি, আরও কিছু পড়ুয়া বিষয়টি নিয়ে পড়ার জন্য আবেদন করবে।’ উল্লেখ্য, উলটো ছবি দেখা গিয়েছে শিলিগুড়ি ডনবসকো স্কুলে। সেখানে অষ্টম শ্রেণি থেকেই এই বিষয়টি পড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।