উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শেখ শাহজাহান কোথায়? সন্দেশখালিতে তল্লাশি অভিযানে গিয়ে ইডির উপর হামলার ঘটনার পর থেকে সবার মুখে মুখে একটাই প্রশ্ন। ইতিমধ্যেই ২৫ দিন অতিক্রান্ত, এখনও অন্তরালে সন্দেশখালির বাদশা শাহজাহান শেখ (Shahjahan Seikh)। গত বুধবার সন্দেশখালির (Sandeshkhali) সরবেড়িয়ায় তালা ভেঙে শাহজাহানের বাড়িতে ঢুকেছিল ইডি। তল্লাশি অভিযান শেষে ফেরার সময় তৃণমূল নেতার বাড়ির দরজায় নোটিস সাঁটিয়ে ফেরেন তদন্তকারীরা। সেই নোটিসে ২৯ জানুয়ারি সকাল ১১ টায় সিজিও কমপ্লেক্স আধার কার্ড, পাসপোর্ট, ভোটার কার্ড, প্যান কার্ড এবং নিজের পাসপোর্ট আকারের ছবি নিয়ে শাহজাহানকে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছেন তদন্তকারীরা। ইডির নির্দেশকে অমান্য করে সিজিওতে গেলেন না শাহজাহান। ইডি লুক আউট নোটিস জারি করেছে। পুলিশও তাঁর খোঁজ চালাচ্ছে। অন্তরালে থেকে ইডির বিশেষ আদালতে আগাম জামিনের (anticipatory bail) আবেদন করেছেন এই তৃণমূল নেতা। সেই আবেদনে শাহজাহানের সই থাকলেও পুলিশ তাঁর টিকিটিও খুঁজে পাচ্ছে না।
এসবের মধ্যেই নেতা-মন্ত্রীদের গলা থেকেও বিভিন্ন মন্তব্য শোনা যাচ্ছে শাহজাহানের সম্পর্কে। মন্ত্রী অখিল গিরি বলছেন, শাহজাহান হয়ত চিকিৎসার জন্য বাংলার বাইরে গিয়েছেন। শুভেন্দু আবার বলছেন, গর্তে ঢুকে রয়েছেন শাহজাহান। এবার শেখ শাহজাহান প্রসঙ্গে মুখ খুললেন বিধানসভার স্পিকার তথা বারুইপুরের বিধায়ক বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি মনে করছেন, আদালতের তত্ত্বাবধানেই (supervision of the court) রয়েছেন শাহজাহান। এসবের মধ্যেই এবার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Biman Banerjee) যুক্তি, ‘শাহজাহান শেখ কি আদালতে যেতে পারেন না? আমি তো মনে করি, আদালতের তত্ত্বাবধানে আছেন। যখন কোনও ব্যক্তি আদালতে আবেদন করেন আগাম জামিনের জন্য, তার মানে তিনি এখন আদালতের তত্ত্বাবধানে আছেন।’
এদিন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, ‘আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার অধিকার প্রত্যেকের রয়েছে। শাহজাহান শেখ তো আবেদন করতেই পারেন। এতে অন্যায় কী আছে! শাহজাহান শেখের বিরুদ্ধে একটা মামলা হয়েছে। তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন আগাম জামিনের জন্য। এতে ভুল কী আছে?’ আদালতে নিজে হাজির না থেকে, কেন আইনজীবী মারফত আবেদন করা হচ্ছে? তাহলে কি শাহজাহান গ্রেপ্তারির আশঙ্কা করছেন? এই প্রশ্নে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু বললেন, ‘সেটা তাঁকেই জিজ্ঞেস করবেন।’
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতির তদন্তে সন্দেশখালিতে শাহজাহানের বাড়িতে হানা দিয়েছিল ইডি। শাহজাহানের বাড়ি পৌঁছানোর পরই ইডি আধিকারিকদের ওপর হামলা চালায় নেতার অনুগামীরা। সেদিন রীতিমতো মার খেয়ে এলাকা ছাড়তে হয়েছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সির কর্তাদের। গ্রামবাসীদের আক্রমণে পিছু হঠেছিলেন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। মাথা ফেটেছিল তিন ইডি অফিসারের। তারপর থেকেই বেপাত্তা শাহজাহান শেখ।