দেবদর্শন চন্দ, কোচবিহার: দশম কলকাতা আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে ‘মোবাইল ফিল্ম প্রতিযোগিতা’-য় (Mobile Film Competition) মনোনীত হয়েছে কোচবিহার (Coochbehar) শহরের ঘোষপাড়ায় বাসিন্দা শাওন রক্ষিতের তৈরি শর্ট ফিল্ম (Short Film) ‘ভাঙা বড়শি’। শাওন কোচবিহারের জেনকিন্স স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র। পড়াশোনার পাশাপাশি নাটক তার ভালোলাগার বিষয়। সে কারণে তাকে ছোটদের থিয়েটার স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন শাওনের বাবা-মা। গত তিন বছর ধরে সেখানে অভিনয় শিখছে সে। তার তৈরি শর্ট ফিল্মটি মনোনীত হওয়ায় দারুণ খুশি শাওনের পরিবারের সকলে। এ বিষয়ে কোচবিহারের ‘ছোটদের থিয়েটার স্কুল’-এর পক্ষে সোমনাথ ভট্টাচার্য জানান, ‘রবিবার খবরটি জানতে পেরেছি। এত ছোট বয়সে মোবাইলে ছবি তৈরি করে তা মনোনীত হওয়াটা অনেক বড় প্রাপ্তি।’
জানা গিয়েছে, আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উত্সব কমিটির পক্ষ থেকে ১৩-১৬ বছর বয়সি ছাত্রছাত্রীদের মোবাইলে শর্ট ফিল্ম তৈরি করে পাঠাতে বলা হয়েছিল। এর মধ্যে নয়টি মোবাইলে তৈরি স্বল্পদৈর্ঘ্যের ছবি দেখানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর মধ্যে স্থান পেয়েছে শাওনের শর্ট ফিল্মটিও। নয়টি ছবির মধ্যে সেরা তিনটি শর্টফিল্মকে সম্মাননা দেওয়া হবে। শাওন জানায়, ‘গত ২৮ তারিখ কলকাতা থেকে ফোন করে বিষয়টি আমাকে জানানো হয়। আমাকে যেতে বলা হলেও কোচবিহারে আমাদের অনুষ্ঠান থাকায় যেতে পারিনি।’
পরীক্ষা শেষের পর ব্যস্ত শহর থেকে বেরিয়ে গ্রামীণ এলাকার রস আস্বাদন করতে যাওয়া এক বালককে নিয়েই তৈরি শাওনের শর্ট ফিল্মটি। গ্রামবাংলার চিরসবুজ দৃশ্য, মাঠ, কুল গাছ, আঁকাবাকা কাঁচা গলি, পুকুর, মেঠোপথের দৃশ্য সেখানে ফুটে উঠেছে। শহুরে এবং গ্রামীণ এলাকার দুই বন্ধুর কথোপকথন, ভাববিনিময়, খেলা, জলকেলি সেই ছবিতে ফুটে উঠেছে। শাওনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কোচবিহারের ছড়ার কুঠি এবং সোনারি এলাকায় তারা ছবির শুটিং করে। কোচবিহার রামভোলা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র কুন্তল রায়ও ছবিতে অভিনয় করেছে। শাওন জানায়, ‘ফিল্মটি তৈরি করতে সময় লেগেছে একদিন। স্ক্রিপ্ট এবং এডিটিং আমার নিজেরই করা। আমি আর কুন্তল মিলে সেখানে অভিনয় করেছি। এবারই প্রথম মোবাইলে শর্ট ফিল্ম তৈরি করে পাঠিয়েছিলাম। সেটা মনোনীত হয়েছে জেনে ভালো লাগছে। মায়ের উৎসাহেই এটি সম্ভব হয়েছে।’