উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রবিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে বাজি কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে প্রাণ গিয়েছে কমপক্ষে ৭ জনের। আহত আরও ৮। স্থানীয়রা এসে দেখেন ৫০-১০০ মিটার এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটইয়ে রয়েছে দগ্ধ দেহ। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে রাজ্যের শাসকদলকে বিঁধলেন বিজেপি বিধায়ক তথা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। পাশাপাশি এনআইএ তদন্তের দাবিও জানাল গেরুয়া শিবির।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশি মদতেই পাড়ার ভিতরে রমরমিয়ে চলছিল এই অবৈধ বাজি কারখানা। মদত রয়েছে বেশ কিছু প্রভাবশালী তৃণমূল নেতার। এই নেতারাই নিয়মিত টাকা নিতেন কারখানার মালিকের কাছ থেকে। তা নিয়ে শুভেন্দু কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শাসকদলকে। শুভেন্দু বলেন, “এগরার ঘটনার পর হেলিকপ্টারে চড়ে ১৫দিন পরে এসে অনেক বক্তব্য রেখেছিলেন। ভানু বাগের শ্রাদ্ধ-শান্তিতে এসেছিলেন। মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে কমিটি হয়েছে, ডিএমরা জায়গা দেখছে, এসওপি তৈরি হচ্ছে। কিন্তু আদপে তদন্তের কিছুই হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর এসব দিকে নজর নেই। তাঁর নজর কীভাবে চোরদের বাঁচানো যায়। খেলা, মেলাতে যথেচ্ছ অর্থ ব্যয় করে মানুষকে সাময়িকভাবে ভুলিয়ে রাখার কাজেই তিনি ব্যস্ত।”
বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “এগরার ঘটনার পর মুখ্যমন্ত্রী অবৈধ বাজি কারখানা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাও কেন একের পর এক বেআইনি কারখানার হদিস মিলছে বিস্ফোরণের পর? এর দায় মুখ্যমন্ত্রীকে নিতে হবে।”
আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি বলেন, “কোন রাসায়নিক ব্যবহার হতো যে এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণ হল বাজি কারখানার ভিতরে? আশেপাশের বাড়িগুলিও ক্ষতিগ্রস্ত হল। আমাদের দলের এক বুথকর্মীর মা’ও এই ঘটনায় মারা গিয়েছেন। আরও অনেকের মৃত্যু হয়েছে বিস্ফোরণের জেরে। যারা এই ঘটনায় মূল দোষী তারা পলাতক। ওদের ধরতে পারলেই আসল সত্য সামনে আসবে। আজকাল এরকম ঘটনা ঘটলেই দোষীদের গা ঢাকা দিতে সাহায্য করে প্রশাসন আর দোষ চাপায় বিরোধীদের ঘাড়ে।”
তবে এই বাজি কারখানার বিস্ফোরণ প্রসঙ্গে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “যে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। কেন এমন হল, তা পুলিশ-প্রশাসন তদন্ত করে দেখছে। তার আগেই চারপাশ থেকে দোষ চাপানোর পালা শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধীরা শকুনের রাজনীতি শুরু করেছেন। চিল চিৎকার জুড়েছেন রাজ্য সরকারের দোষ, প্রশাসনের গাফিলতি বলে। আগে তদন্ত হোক, তারপর সত্যি সামনে আসবে। যেভাবে বাজি শিল্পকে নিয়ে কাটাছেঁড়া করা হচ্ছে, তা একেবারেই ঠিক নয়।”