সানি সরকার, শিলিগুড়ি: ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক (NH 10) খুলছে বটে, কিন্তু ভোগান্তির শেষ হয়নি। বরং ঘুরপথের থেকে সিকিমের (Sikkim) লাইফলাইনে দুর্ভোগটা বেশি, বৃহস্পতিবার এমনই উপলব্ধি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পর্যটকদের (Tourist)। যা নিয়ে তাঁদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। রাস্তা খুলে দেওয়ার পর কেন পাহাড় কাটা হচ্ছে, তীব্র যানজটে আটকে এমনই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। যদিও রাস্তা খোলা রাখার ক্ষেত্রে আর অন্য কোনও উপায় নেই বলে বক্তব্য পূর্ত দপ্তরের আধিকারিকদের বক্তব্য।
এনএইচ ডিভিশনের এক ইঞ্জিনিয়ার বলছেন, ‘লিকুভিরে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে রাস্তা রাখতে পাহাড় কাটতে হচ্ছে। পাহাড় কাটার সময় দুর্ঘটনা এড়াতে যান চলাচলে কিছুটা বিধিনিষেধ কার্যকর করা হচ্ছে। যার জন্য যানজট হচ্ছে। দু’দিন পর এই সমস্যা আর থাকবে না বলে আশা করছি।’
শনি এবং রবিবার পাহাড়ে ফের ভারী বৃষ্টির ভ্রূকুটি। ফলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক ফের বন্ধ হয়ে যাবে না তো, এই প্রশ্ন রয়েছে অনেকের। বৃষ্টি শুরুর আগে লিকুভিরে (Likhu Bhir) পাহাড় কাটার কাজ শেষ করে রাস্তা তৈরি করতে চাইছে পূর্ত দপ্তরের এনএইচ ডিভিশনও। আর খোলা রাস্তায় পাহাড় কাটার কাজ বৃহস্পতিবার শুরু হতেই চরম ভোগান্তির শিকার জাতীয় সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরা। কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটে আটকে নাভিশ্বাস উঠেছে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি পর্যটকদের। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বিমান এবং ট্রেন মিস করেন। বাগডোগরা বিমানবন্দরে আসার জন্য এদিন সকালে গ্যাংটক থেকে রওনা দিয়েছিলেন রাজস্থানের বাসিন্দা মুকেশ জৈন। তিনি বলছেন, ‘রাস্তা খুলে যাওয়ার খবরে এনএইচ টেন দিয়ে শিলিগুড়িতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। যেভাবে গাড়িতে আটকে আছি, তাতে এদিন আর ফ্লাইট ধরতে পারব না।’ বিকেল ৩টা নাগাদ তাঁর বিমান ছিল বলে জানান মুকেশ।
কামরূপ এক্সপ্রেস মিস করেছেন জানিয়ে এদিন বিকেলে কালিম্পংয়ের বাসিন্দা রবিন রাই বলেন, ‘চারদিন রাস্তা বন্ধ ছিল। তাও কেন পাহাড় কাটার কাজ শেষ করা গেল না বুঝতে পারছি না। কাজ শেষ হয়ে গেলে এমন বিপাকে পড়তে হত না।’ ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থেকে অনেকের উপলব্ধি, গরুবাথান-লাভা রুট থেকে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যেতে বেশি সময় লাগছে।
বৃহস্পতিবারের পর শনিবারও লিকুভিরে পাহাড় থেকে পাথর পড়তে থাকায় ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় কালিম্পং জেলা প্রশাসন। কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে বুধবার বিকেলে রাস্তাটি খুলে দেওয়া হয়। লিকুভিরে এবং রবিখোলায় একমুখী যান চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। কিন্তু একেই ওয়ান ওয়ে, তার ওপর পাহাড় কাটার কাজ বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়ায় এদিন চরম দুর্ভোগে পড়তে হল প্রায় সকলকেই।