সানি সরকার, শিলিগুড়ি: কেন্দ্রের ‘গুঁতো’য় ‘হুঁশ’ ফিরল সিকিমের(Sikkim)। অবশেষে পর্যটকদের হেনস্তা রোধে বা গাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে ‘নজরদারি’, ‘হেল্পলাইন নম্বর’-এর মতো বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নিল সিকিমের পর্যটন দপ্তর। রুট অনুসারে সরকারিভাবে নতুন করে ভাড়া নির্দিষ্ট করা যায় কি না, এমন বিষয়ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে প্রশাসনিক কর্তাদের বক্তব্য।
কেন্দ্রীয় সরকারের সতর্কতামূলক চিঠির প্রেক্ষিতে সোমবার রাজ্যের ট্যুর অপারেটার, ট্রাভেল এজেন্টদের উপস্থিতিতে বৈঠকে বসে পর্যটন দপ্তর। পৌরোহিত্য করেন দপ্তরের প্রধান সচিব সিএস রাও। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘পর্যটকদের যাতে কোনওরকম সমস্যায় না পড়তে হয়, তা গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। এরপরও কিছু অভিযোগ উঠেছে। অতিরিক্ত গাড়ি ভাড়া নেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’ দপ্তরের চিফ ইঞ্জিনিয়ার নীরজ প্রধান জানান, সমস্যার সমাধানে নাথু লা সহ বেশ কয়েকটি জায়গায় ‘প্রতিকার সেল’ খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
পর্যটন মরশুম এলেই সিকিমে গাড়ি ভাড়া লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, যার জন্য হেনস্তার মুখে পড়তে হয় পর্যটকদের। এমনই কিছু অভিযোগ সম্প্রতি জমা পড়ে পর্যটনমন্ত্রকের সেন্ট্রালাইজড পাবলিক গ্রিভান্স রিড্রেস অ্যান্ড মনিটরিং সিস্টেমে। অভিযোগকারীদের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের এক উচ্চপর্যায়ের আমলাও রয়েছেন। সিকিমে বেড়াতে গিয়ে কোথায় কীভাবে তাঁকে গাড়ি ভাড়া নিয়ে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে, তা তিনি নিজের অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন। যার প্রেক্ষিতে সিকিমকে সতর্ক করে দিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলে গত ১৩ মে পর্যটনমন্ত্রক চিঠি দেয় সিকিম প্রশাসনকে। চিঠির বিষয়টি প্রথম প্রকাশ্যে আনে উত্তরবঙ্গ সংবাদ। মূলত ওই চিঠির প্রেক্ষিতেই সিকিম পর্যটন দপ্তরের এই বৈঠক।
পর্যটন দপ্তর সূত্রে খবর, সকলের সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে ‘অভিযোগ সেল’, ‘হেল্পলাইন নম্বর’, ‘প্রতিকার সেল’ খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রুট অনুযায়ী ভাড়া নির্দিষ্ট করার বিষয়টি নিয়েও এদিন আলোচনা হয়েছে। নথিভুক্ত সংস্থার বাইরে যাতে পর্যটকরা গাড়ি ভাড়া না করেন, সে ব্যাপারে প্রচার চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এর আগেও ভাড়া নিয়ে সমস্যা দেখা দেওয়ায় সরকারি তরফে ভাড়া নির্দিষ্ট করা হয়েছিল যেমন, গ্যাংটক-ছাঙ্গু ৪,৫০০ টাকা, গ্যাংটক-ইয়ুমথাং এক রাত্রিবাস সহ আপডাউন ৮,০০০ টাকা। কিন্তু নজরদারি বা প্রশাসনিক পদক্ষেপের অভাবে প্রতি রুটেই দ্বিগুণ ভাড়া নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এবার থেকে অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব বন্দনা ছেত্রী।