বিদেশ বসু, মালবাজার: দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন (Lok Sabha Election 2024)। সমস্ত রাজনৈতিক দলই জোরকদমে প্রচার করছে। যদিও মাল শহরের অধিকাংশ ভোটার এখনও ‘সাইলেন্ট’। এই ভোটাররা কোনদিকে ঝোঁকেন, তা নিয়েই ধন্দে বিভিন্ন দলের নেতারা। রাজনৈতিক মহলের মতে, ‘সাইলেন্ট’ ভোটারদের (Silent Voters) রায়ই প্রার্থীদের ভবিতব্য ঠিক করবে।
পশ্চিম ডুয়ার্সের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর মালবাজার (Malbazar)। এখানে বহু রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়। ইতিমধ্যে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) মাল শহরে জনসভা করেছেন। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও (Suvendu Adhikari) দলীয় সভা করেছেন মালবাজারে। আবার সিপিএমের যুব নেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায় (Minakshi Mukherjee) শহর ঘেঁষা তেশিমলা গ্রাম পঞ্চায়েতে ঝাঁঝালো বক্তব্য রেখেছেন। জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসনে ১৯ এপ্রিল প্রথম দফা ভোটগ্রহণ হবে। ভোটের আগে হাতেগোনা কয়েকদিন মাত্র বাকি। যার ফলে প্রতিটি দলই এখন প্রচারে ঝড় তুলেছে। প্রচারে নেমে তৃণমূল কংগ্রেস লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, রূপশ্রী ইত্যাদি প্রকল্পকে হাতিয়ার করছে। অন্যদিকে বিজেপির দাবি, কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থেই সর্বত্র উন্নয়ন হয়। এ রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারতের মতো প্রকল্প চালু করতে দেয়নি তৃণমূল। আবার সিপিএমের বক্তব্য, বিজেপি, তৃণমূল উভয়ই দুর্নীতিগ্রস্ত।
তবে মাল শহরে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচি আয়োজিত হলেও, সেগুলিতে সাধারণ মানুষের উপস্থিতি নগণ্য বললেই চলে। সবপক্ষ বাড়ি বাড়ি প্রচারও করছে। ভোটাররা নেতাদের কথাও শুনছেন। কিন্তু তাঁরা যেন অনেকটাই নিশ্চুপ। ফলে এই ‘সাইলেন্ট’ ভোটাররা কোনদিকে ঝুঁকবেন, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে ধন্দ। যদিও প্রতিটি দলেরই দাবি, ভোটাররা তাদের সঙ্গেই আছেন।
তৃণমূল কংগ্রেসের মাল শহর কমিটির সভাপতি অমিতকুমার দে বললেন, ‘এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, শহরের ভোটারদের একটি অংশ সাইলেন্ট রয়েছেন। আমরা তাঁদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির আঁচ পেতে চেষ্টা করছি।’ তাঁর সংযোজন, ‘মাল শহরের ভোটাররা যথেষ্ট সচেতন। কেন্দ্র সরকারের নীতি যে দেশের নানা ক্ষেত্রের জন্য উদ্বেগজনক, তা তাঁরা বুঝতে পারছেন।’ অন্যদিকে, বিজেপির মাল শহর মণ্ডল কমিটির সভাপতি নবীন সাহার বক্তব্য, ‘আমরা যখন বাড়ি বাড়ি প্রচারে যাচ্ছি, তখন বোঝা যাচ্ছে যে কিছু ভোটার সাইলেন্ট রয়েছেন।’ তাঁর সংযোজন, ‘আমাদের বুথভিত্তিক প্রচার চলছে। ভোটাররা তৃণমূলের ওপর বীতশ্রদ্ধ। রায় আমাদের পক্ষেই আসবে।’ অন্যদিকে, সিপিএমের মাল এরিয়া কমিটির সম্পাদক রাজা দত্তের দাবি, ‘মাল শহরের ভোটাররা বরাবরই সচেতন। তাঁরা রাজ্যে বামফ্রন্ট জমানা দেখেছেন। আমরা প্রচারে ভোটারদের সাড়াও পাচ্ছি।’