শুভাশিস বসাক, ধূপগুড়ি: অনলাইন গেমে কে কতটা পয়েন্টে এগিয়ে, তা বিচার করেই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট। ধূপগুড়ি (Dhupguri) ব্লকজুড়ে এমনই একাধিক উদাহরণ সামনে এসেছে। তিন তরুণ ইতিমধ্যেই তাঁদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট (Facebook Account) বিক্রি করে দিয়েছেন। তাঁরা জানান, গত চার-পাঁচ মাস আগে অনলাইন গেম (Online Game) খেলতে শুরু করেন। নিয়মিত খেলে বেশ ভালো পয়েন্ট হয়েছিল। তারপরই গেমের মেসেজ মাধ্যমে অ্যাকাউন্ট কেনার প্রস্তাব আসে। এমনকি ভালো দাম দেওয়া হবে বলেও প্রস্তাব দেওয়া হয়। এরপরই সব নিয়মাবলি শুনে অ্যাকাউন্ট বিক্রি করতে রাজি হন তাঁরা। ধূপগুড়ি হরি মন্দির এলাকার এক তরুণ ৮ হাজার টাকায় তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বিক্রি করেছেন। তাঁর কথায়, ‘অনলাইন গেমটিতে ঢুকতে গেলে ফেসবুক আইডি বা ই-মেল অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন হয়। তাই ফেসবুক দিয়েই লগ-ইন করেছিলাম। খেলতে খেলতে ভালো পয়েন্ট হয়। ৮ হাজার টাকায় আমার সেই অ্যাকাউন্টটি বিক্রি করি। তবে বিক্রির আগে নিজের মোবাইল নম্বর, ই-মেল আইডি সব পরিবর্তন করে দেওয়া হয়েছে। শুধুমাত্র ফ্রেন্ড লিস্ট এবং সোশ্যাল মিডিয়ার পাসওয়ার্ড বিক্রি করা হয়েছে।’
কালীরহাটের এক তরুণের গল্পও প্রায় একই। তিনি সদ্য অনলাইন গেমে ঢুকেছেন। তাঁর পয়েন্ট খুব বেশি না হওয়ায় মাত্র ২ হাজার টাকায় তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বিক্রি করেছেন বলে জানান। এই উদাহরণ শুধু এক-দুটি নয়। অনেক রয়েছে। কিছু ঘটনা প্রকাশ পেয়েছে, আর কিছু ঘটনা পুলিশি নজরের আড়ালে থেকে গিয়েছে। আরেক তরুণ নিজের সোশ্যাল অ্যাকাউন্ট বেশ ভালো দামেই বিক্রি করেছেন। কিন্তু কত টাকায় বিক্রি করেছেন তা প্রকাশ্যে আনেননি। তবে অ্যাকাউন্ট বিক্রি করার পর ফের নতুন অ্যাকাউন্ট খুলে অনলাইনে গেম খেলা শুরু করেছেন। আবারও ভালো পয়েন্ট করতে পারলে প্রস্তাব আসবে এবং ভালো দাম পেলে বিক্রি করে দেবেন বলেও তিনি জানান।
প্রতিটি ঘটনায় যুক্তরা নিজেদের নাম না প্রকাশের শর্তেই মুখ খুলেছেন। এবিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশের সাইবার সেলের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরাও কিছু বলতে নারাজ। তবে পুলিশের সাইবার বিশেষজ্ঞ এক আধিকারিকের বক্তব্য, ‘সোশ্যাল মিডিয়ায় অনেক ব্যক্তিগত তথ্য থাকে। এভাবে সেটা কাউকে টাকার বিনিময়ে বা এমনিতেও শেয়ার করা উচিত নয়। নতুন প্রজন্মকে বারবার বুঝিয়েও কাজ হচ্ছে না। অনেকক্ষেত্রে আর্থিক প্রলোভন সামলাতে না পেরেই তাঁরা এই কাজ করছেন।’