শিলিগুড়ি: ফেসবুকে (Facebook) মুকেশ আম্বানির আমন্ত্রণ সম্বলিত একটি বিজ্ঞাপন বেশ কিছুদিন ধরেই নজরে পড়ছিল শিলিগুড়ির (Siliguri) এক তরুণীর। সেইমতো অনলাইন মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেটাই কাল হল। ইনভেসমেন্ট সম্বলিত ওই বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে সাইবার প্রতারণার (Cyber fraud) শিকার হলেন তিনি। বিজ্ঞাপনে সাড়া দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই একটি গ্রুপে যুক্ত হয়ে প্রথমে পঞ্চাশ হাজার টাকা, পরে তিন লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা ইনভেস্ট করেন তরুণী।
তরুণীর কথায়, ‘ইনভেসমেন্ট হিসেবে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ শতাংশ প্রফিটের মার্জিন বলা হয়েছিল। সেই আশাতেই আরও প্রতারণায় জড়িয়ে পড়ি।’ শেষে ইনভেস্ট করা টাকার মধ্যে থেকে ৪০,০০০ টাকা চাইতেই সবটা প্রকাশ্যে চলে আসে। তরুণী বুঝে যান, সবটাই আসলে প্রতারণা চক্র। সম্প্রতি গোটা বিষয়টা জানিয়ে শিলিগুড়ি সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
বিজ্ঞাপনে সাড়া দেওয়ার পর ঠিক কী ছিল ওই গ্রুপে? ওই তরুণীর কথায়, ‘আমি ফেব্রুয়ারি মাসের ৯ তারিখ ওই গ্রুপে যুক্ত হই। সেখানে বিভিন্নধরণের তথ্য দেওয়া হত। প্রথমে ভাবি, সব তথ্যই সত্য, কিন্তু এখন পরিষ্কার হয়েছি, সবটাই ভুয়ো। গ্রুপে একজন হেড অ্যানালিটিস্ট ছিলেন। সে প্রতিদিন আমার গ্রুপে ক্লাস নিত। সেইসঙ্গে প্রতিদিন কোন স্টল সবচেয়ে বেশি, দিন হিসেবে প্রফিট দেবে, সেই তথ্য দিত।’ এক্ষেত্রে প্রফিট মার্জিন থাকত ৫ থেকে ১০ শতাংশের মধ্যে। ওখানে নিয়ম এরকম ছিল, এই স্টকগুলো ইনভেস্টাররা নিয়ে আসবে। পরদিন বিক্রি করে দেবে। তরুণীর দাবি, ‘ইনভেস্টাররা যে কোম্পানির স্টকগুলো নিয়ে আসত, সেই কোম্পানিগুলোও মনে হত, আসল।’ এরপরই ওই তরুণী প্রথমে পঞ্চাশ হাজার টাকা ইনভেস্ট করেন। পরে তিন লক্ষ চল্লিশ হাজার টাকা ইনভেস্ট করেন। তরুণীর চোখ খোলে চলতি মাসের শুরুতে। ইনভেস্ট করা টাকার থেকে ৪০,০০০ টাকা ফেরত চান তিনি। কিন্তু সেই টাকা ফেরত না পেয়ে বুঝতে পারেন, কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে। এরপর গ্রুপের মাধ্যমে গ্রুপ লিডারদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। যদিও কোনও প্রত্যুত্তর পাননি তিনি। গোটা ঘটনায় চলতি সপ্তাহে সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন তরুণী।
প্রসঙ্গত, গত কয়েকমাসে একাধিক সাইবার প্রতারণার ঘটনা সামনে এসেছে। স্বাভাবিকভাবেই সেগুলি সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেছে।