সাগর বাগচী, শিলিগুড়ি: বৃহন্নলাদের হোমে বসে এবার থেকে আশপাশের এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াবেন বহ্নিশিখা ঘটক। সাত বছর ধরে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে (North Bengal Medical College) একা সময় কাটিয়েছেন ৬৫ বছরের বহ্নিশিখা। বুধবার তাঁকে মাদারিহাটের উত্তর ছেকামারিতে বৃহন্নলা পরিচালিত হোমে স্থানান্তরিত করা হয়। তিনদিনের মধ্যেই তিনি হোমের আবাসিকদের সঙ্গে একেবারে মিশে গিয়েছেন। গল্পগুজব করে সময় কাটাচ্ছেন। পাশাপাশি শিলিগুড়ির (Siliguri) শক্তিগড় তিন নম্বর রাস্তায় নিজের বাড়িতে ফেরার ইচ্ছের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
বহ্নিশিখা শিলিগুড়ির প্রধান ডাকঘরে (Siliguri Post Office) কর্মরত ছিলেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে কাজে যাওয়া বন্ধ করে দেন। চাকরি থেকে অবসর নেননি, দীর্ঘদিন মাইনে তোলেননি বলেও খবর। তবে সাত বছর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে আত্মীয় পরিজনহীন অবস্থায় থাকাকালীন ওই বৃদ্ধার ঠিকঠাক চিকিৎসা হয়েছে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। দার্জিলিং ডিস্ট্রিক্ট লিগ্যাল এইড ফোরামের সভাপতি অমিত সরকারের কথায়, ‘ওই বৃদ্ধা বাচ্চাদের পড়াতে চেয়েছেন। বাচ্চাদের সঙ্গে কথাবার্তা বললে তাঁর মনটা অনেক হালকা হবে। তিনি যে শিক্ষিত, সেটা তাঁর কথাবার্তাতে স্পষ্ট। তিনি যত সুস্থ হচ্ছেন, ততই পুরোনো কথা মনে করে বলছেন।’
বহ্নিশিখা ২০১৭ সাল থেকে মেডিকেলে ভর্তি থাকলেও তাঁর পরিবারের কোনও সদস্য যোগাযোগ করতে আসেননি। এমন পরিস্থিতিতে মেডিকেলের মহিলা ওয়ার্ডের ভেতর একটি শয্যায় দীর্ঘ ৭ বছর ধরে একা থেকেছেন বৃদ্ধা। অমিত আরও বলেন, ‘বৃদ্ধার সুরক্ষার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি জানানো হচ্ছে। তিনি বাড়ি ফেরার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। বাড়ি ফিরে তিনি যাতে সম্পত্তি ফিরে পান, সেই চেষ্টা আমরা করছি।’
উল্লেখ্য, বহ্নিশিখা তাঁর পরিবার এবং সহকর্মীদের একাংশের বিরুদ্ধে মানসিক ও শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছিলেন। যা নিয়ে তিনি ওই ফোরামের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।